প্রতিদিনের জিকির - দশটি সহজ জিকির দিয়ে আপনার কথা ও কাজ সাজান
১-বিসমিল্লাহঃ
বিসমিল্লাহ
শব্দের অর্থ, আল্লাহর নামে শুরু করছি। কাজের
শুরুতে বিসমিল্লাহ বলার অভ্যাস করুন।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যদি প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ আল্লাহকে স্মরণ না করে শুরু করা হয়, তবে তা লেজবিহীন (বরকতময়) হয়ে যায়।—— (মুসনাদে আহমাদ ১৪/৩২৯)
২-সুবহানাল্লাহ:
সুবহানাল্লাহ
শব্দের অর্থ আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত। আপনি যদি একটি আশ্চর্যজনক ভাল কাজ দেখেন
বা একটি দুর্দান্ত ভাল জিনিস শুনতে পান তবে এটি বলার অভ্যাস করুন। যেমন
সুবহানাল্লাহ! পুরো ঘরে আগুন, কিন্তু কুরআন
অক্ষত!
৩-আল হামদুলিল্লাহঃ
আল
হামদুলিল্লাহ শব্দের অর্থ হল, সমস্ত প্রশংসা
সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য। কোনো সুসংবাদ বা সুসংবাদের বিপরীতে এটি বলার অভ্যাস
করুন। যেমন ভাই, কেমন আছেন? উত্তর, আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সর্বোত্তম (মর্যাদাপূর্ণ) বাক্য হল চারটি-
- সুবহানাল্লাহ (سُبْحَانَ اللّٰهِ),
- আল
হামদুলিল্লাহ (الْحَمْدُ لِلّٰهِ),
- লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ (لا لِلَهَ إِلَّا اللّٰهُ),
- আল্লাহু
আকবার (اللّٰهُ أَكْبَرُ)। '
—— (মিশকাত ২২৯৪)
৪-মাশাআল্লাহ:
মাশাআল্লাহ
শব্দের অর্থ, আল্লাহ যেমন চান। এটি আলহামদুলিল্লাহ
এবং সুবহানাল্লাহ একইভাবে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ যে কোনো সুন্দর ও ভালো বিষয়ে বলুন।
যেমন মাশাআল্লাহ, আপনি অনেক বড় হয়ে
গেছেন।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন বিস্ময়কর বস্তু দেখে মাশাআল্লাহ লা-ক্বাওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ বলে, তাকে খারাপ দৃষ্টি স্পর্শ করবে না।—— (মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৫/২১)
৫-নাউজুবিল্লাহঃ
নাউজুবিল্লাহ
শব্দের অর্থ হচ্ছে, আমরা এ থেকে
আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। কোন মন্দ ও পাপ কাজ দেখলে আত্মরক্ষায় বলুন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'ভয়ংকর বিপদ, দুর্ভাগ্যের অতল গহ্বর, মন্দ ভাগ্য এবং শত্রুর আনন্দ থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাও।'—— (সহীহ বুখারী-৬১৭৩)
৬-ইনশাআল্লাহ:
ইনশাআল্লাহ শব্দের অর্থ, যদি আল্লাহ চান। ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে চাইলে বলুন। আল্লাহ বলেন, ‘যদি আল্লাহ চান’ না বলে।—— (সূরা আল-কাহফ ২৩)
৭-আস্তাগফিরুল্লাহঃ
আস্তাগফিরুল্লাহ
শব্দের অর্থ আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। কোন অনাকাঙ্খিত অন্যায়
বা পাপ হলে আমরা এটা বলব।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি দিনে সত্তর বারের বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তওবা করি। '—— (সহীহ বুখারী-৬৩০৬)
৮-জায়াকাল্লাহু খায়রান:
এর অর্থ হল
আল্লাহ আপনাকে সর্বোত্তম প্রতিদান দেবেন। যদি কেউ আপনার কোন উপকার করে, তাকে বলুন ধন্যবাদ না বলতে, জায়াকাল্লাহু খাইরা।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির জন্য একটি ভাল কাজ করা হয়েছে এবং সে ‘যায়াকাল্লাহু খাইরা’ বলে উপকারকারীর জন্য প্রার্থনা করেছে, সে নিঃসন্দেহে (দানকারীর) পূর্ণ প্রশংসা করেছে।—— (তিরমিযী ২০৩৫)
৯- ইন্নালিল্লাহ বা ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রা-জিউন:
অর্থ, নিশ্চয়ই আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁর
কাছেই ফিরে যাব। কোন খারাপ খবর বা বিপদের ক্ষেত্রে আমরা এটি বলব।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যতক্ষণ কোন মুসলিম পুরুষ বা মহিলা কোন বিপদ-আপদ আসার পর তার মনে জেগে ওঠে এবং “ইন্নালিল্লাহ বা ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রা-জিউন” পাঠ করে, ততক্ষণ আল্লাহ তাকে দান করবেন। একটি নতুন পুরস্কার যে তিনি বিপদে পড়েছেন। পতনের প্রথম দিন পেয়েছিলাম। '—— (মুসনাদে আহমাদ ১৮৩৪)
১০-লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ:
অর্থ, মহান আল্লাহর সাহায্য ও সমর্থন ব্যতীত কোন আশ্রয় ও সাহায্য
নেই। শয়তানের কোন ফিসফাস বা দূরদর্শী প্রতারণা এড়াতে আমাদের এটি পড়া উচিত।
নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বেশি বেশি বলুন। কারণ এটা জান্নাতের রত্নগুলোর অন্তর্ভুক্ত।
মাখুল রহ. তিনি বলেন, যে ব্যক্তি "লা হাওলা ওয়াল কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ ওয়াল মানজায়া মিনাল্লাহি ইল্লা ইলাইহি" পাঠ করে, আল্লাহ তার সত্তর প্রকারের অনিষ্ট দূর করে দেন এবং তাদের মধ্যে সাধারণ বা ছোট বিপদ হল দারিদ্র্য।—— (তিরমিযি-৩৬০১)
আল্লাহ আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফীক দান করুন আমিন আমিন ইয়া রাব্বুল আলামীন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url