১৭ শ্রেণির মানুষ মুসলিম হয়েও জান্নাতে যাবে না

() হারাম খাদ্য ভক্ষণকারী জান্নাতে যাবে না 

হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, যে দেহ হারাম খাদ্য দ্বারা লালিত-পালিত হয়েছে, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সুনানে বায়হাকি : ৫৫২০)

(রক্তের/আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না

হজরত জুবাইর ইবনে মুতইম (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেনআত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহিহ বুখারি : ৫৫২৫)

১৭ শ্রেণির মানুষ মুসলিম হয়েও জান্নাতে যাবে না

() প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী জান্নাতে যাবে না

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনযার অত্যাচার থেকে প্রতিবেশীরা নিরাপদ নয়সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহিহ মুসলিম : ৬৬)

() মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তান ও দাইয়ুস নারী জান্নাতে যাবে না

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনতিন শ্রেনির লোক জান্নাতে যাবে নামাতা-পিতার অবাধ্যদাইয়ুস (অর্থাৎ যে ব্যক্তি তার স্ত্রী-বোন প্রমুখ অধীনস্থ নারীকে বেপর্দা চলাফেরায় বাধা দেয় না) এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলা। (মুসতাদরাকে হাকেম : ২২৬)

(অশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি জান্নাতে যাবে না

হারেছা বিন ওহাব (রা.) বর্ণনা করেনরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেনঅশ্লীলভাষী ও উগ্র মেজাজি ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না। (আবু দাউদ : ৪১৬৮)

() প্রতারণাকারী শাসক জান্নাতে যাবে না

হজরত মাকাল বিন ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিততিনি বলেনআমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছিমুসলমানদের ওপর প্রতিনিধিত্বকারী শাসক যদি এ অবস্থায় মারা যায় যে সে তার অধীনস্থদের ধোঁকা দিয়েছেতাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। (সহিহ বুখারি : ৬৬১৮)

() অন্যের সম্পদ আত্মসাৎকারী জান্নাতে যাবে না

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনযে ব্যক্তি কসম করে কোনো মুসলমানের সম্পদ আত্মসাৎ করেআল্লাহ তাআলা তার জন্য জাহান্নাম ওয়াজিব করে দেন এবং জান্নাত হারাম করেন। এক ব্যক্তি বললেনইয়া রাসুলুল্লাহ! যদিও সামান্য কোনো জিনিস হয়তিনি বললেনযদিও পিপুলগাছের একটি ছোট ডাল হোক না কেন।(সহিহ মুসলিম : ১৯৬)

() খোঁটাদানকারীঅবাধ্য সন্তান ও মদ্যপ জান্নাতে যাবে না

হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেননবী করিম (সা.) ইরশাদ করেনউপকার করে খোঁটা দানকারীমাতা-পিতার অবাধ্য সন্তানসর্বদা মদপানকারীএই তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সুনানে নাসায়ি : ৫৫৭৭)

() চোগলখোর জান্নাতে যাবে না

হজরত হুজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনচোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহিহ মুসলিম : ১৫১)

(১০) অন্য পিতার সঙ্গে সম্বন্ধকারী জান্নাতে যাবে না

হজরত সাদ ও আবু বাকরাহ (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনযে ব্যক্তি জেনেশুনে নিজেকে অন্য পিতার সঙ্গে সম্পর্কিত করেঅর্থাৎ নিজেকে অন্য পিতার সন্তান বলে পরিচয় দেয়তার জন্য জান্নাত হারাম। (সহিহ বুখারি : ৬২৬৯)

(১১) গর্ব-অহংকারকারী জান্নাতে যাবে না

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনযার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার রয়েছেসে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সহিহ মুসলিম : ১৩১)

(১২) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নাফরমান জান্নাতে যাবে না

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনআমার সব উম্মত জান্নাতে যাবেকিন্তু সে ব্যক্তি নয়যে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে। সাহাবীরা আরজ করলেনইয়া রাসুলুল্লাহ! কে অস্বীকার করেছেতিনি বললেনযে আমার আনুগত্য করেসে জান্নাতে যাবে। আর যে আমার নাফরমানি করেসে (জান্নাতে যেতে) অস্বীকার করেছে। (সহিহ বুখারি : ৬৭৩৭)

(১৩) দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে ইলম অর্জনকারী জান্নাতে যাবে না

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনযে ইলম দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা হয় সেই ইলম যে ব্যক্তি দুনিয়াবি কোনো স্বার্থ-সম্পদ হাসিলের উদ্দেশ্যে শিক্ষা করেসে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। (আবু দাউদ : ৩১৭৯)

(১৪) অকারণে তালাক কামনাকারী নারী জান্নাতে যাবে না

হজরত সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনযে নারী তার স্বামীর কাছে অকারণে তালাক কামনা করেসে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। (তিরমিজি : ১১০৮)

(১৫) কালো কলপ ব্যবহারকারী জান্নাতে যাবে না

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিতরাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনশেষ যুগে কিছু লোক কবুতরের সিনার ন্যায় কালো কলপ ব্যবহার করবে। তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। (সুনানে নাসায়ি : ৪৯৮৮)

(১৬) লৌকিকতা প্রদর্শনকারী জান্নাতে যাবে না

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) সূত্রে বর্ণিত এক দীর্ঘ হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনকিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম একজন শহীদকে ডাকা হবে। অতঃপর একজন কারিকে। তারপর একজন দানশীল ব্যক্তিকে হাজির করা হবে। প্রত্যেককে তার কৃতকর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। অতঃপর শহীদকে বীর-বাহাদুর উপাধি লাভের উদ্দেশ্যে জিহাদ করার অপরাধেকারি সাহেবকে বড় কারির উপাধি ও সুখ্যাতি লাভের জন্য কিরাত শেখার অপরাধে এবং দানশীলকে বড় দাতা উপাধি লাভের নিয়তে দান-সদকা করার অপরাধে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (সহিহ মুসলিম : ৩৫২৭)

(১৭) ওয়ারিসকে বঞ্চিতকারী জান্নাতে যাবে না

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেনযে ব্যক্তি কোনো ওয়ারিসকে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করলআল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের অংশ থেকে বঞ্চিত করবেন।(সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৬৯৪)

  • উপকার করে খোটা দেয়া

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنَّانٌ

সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না যে উপকার করে খোটা দেয়। (সুনান নাসাঈহা/ ৫৬৮৮)

  • তক্দীর (ভাগ্যের লিখন) অস্বীকার করা

রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَاقٌّ ، وَلا مُدْمِنُ خَمْرٍ ، وَلا مُكَذِّبٌ بِقَدَرٍ

পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তানমদ্যপায়ী এবং তকদীর অস্বীকার কারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (সিলসিলা সহীহাহাসান৬৭৫)

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

لا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ خَمْسٌ ، مُدْمِنُ خَمْرٍ ، وَلا مُؤْمِنٌ بِسِحْرٍ ، وَلا قَاطِعُ رَحِمٍ ، وَلا مَنَّانٌ ، وَلا كَاهِنٌ "

পাঁচ শ্রেণীর মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (তারা হল,) মদ্যপায়ীযাদুর বৈধতায় বিশ্বাসীআত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীচোগলখোর এবং গণক। (মুসনাদে আহমদহাসানআলবানী)

  • বিশ্বাসঘাতক শাসক

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

مَا مِنْ عَبْدٍ يَسْتَرْعِيهِ اللَّهُ رَعِيَّةً ، يَمُوتُ يَوْمَ يَمُوتُ وَهُوَ غَاشٌّ لِرَعِيَّتِهِ إِلا حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ

"যাকে আল্লাহ তায়ালা জনসাধারণের শাসনকর্তা হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করেছেনকিন্তু সে জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং বিশ্বাসঘাতক অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে তাহলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন।" (সহীহ মুসলিমহা/১৪২)

  • মহিলাদের পর্দা হীনতা

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

صِنْفَانِ مِنْ أَهْلِ النَّارِ ، لَمْ أَرَهُمَا قَوْمٌ مَعَهُمْ سِيَاطٌ كَأَذْنَابِ الْبَقَرِ يَضْرِبُونَ بِهَا النَّاسَ ، وَنِسَاءٌ كَاسِيَاتٌ عَارِيَاتٌ مُمِيلَاتٌ مَائِلَاتٌ ، رُءُوسُهُنَّ كَأَسْنِمَةِ الْبُخْتِ الْمَائِلَةِ ، لَا يَدْخُلْنَ الْجَنَّةَ وَلَا يَجِدْنَ رِيحَهَا ، وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ كَذَا وَكَذَا

দু শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামে যাবে- যাদের আমি এখনো দেখি নি। (অর্থাৎ নবী সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে তাদের আত্মপ্রকাশ হয় নি)

ক) এমন কিছু লোক যাদের হাতে থাকবে গরুর লেজের মত লাঠি। এরা তা দিয়ে জনগণকে প্রহার করবে।

খ) এবং ঐ সকল উলঙ্গ-অর্ধ উলঙ্গ নারী যারা (নিজেদের চলাফেরা ও বেশ-ভূষায়) মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করবে এবং নিজেরাও অন্য মানুষের প্রতি আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথায় উটের মত উঁচু এবং একপাশে ঝুঁকে থাকা চূড়ার মতো কেশ রাশি শোভা পাবে। এসমস্ত নারী জান্নাতে তো যাবেই না বরং জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না অথচ এত এত দূর থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। (সহীহ মুসলিমহা/২১২৮)

  • মুসলিম সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে বসবাসকারী অমুসলিমকে হত্যা করা

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرِحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ ، وَإِنَّ رِيحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا

যে ব্যক্তি কোন মুয়াহিদ তথা মুসলিম সরকারের সাথে চুক্তিবদ্ধ ভাবে বসবাসকারী কোন অমুসলিমকে হত্যা করবে সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ চল্লিশ বছরের পথের দূরত্ব থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। (সহীহ বুখারী হা/৩১৬৬)

  • আত্মহত্যা করা:

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

مَنْ تَرَدَّى مِنْ جَبَلٍ فَقَتَلَ نَفْسَهُ ، فَهْوَ فِى نَارِ جَهَنَّمَ ، يَتَرَدَّى فِيهِ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا ، وَمَنْ تَحَسَّى سَمًّا فَقَتَلَ نَفْسَهُ ، فَسَمُّهُ فِى يَدِهِ ، يَتَحَسَّاهُ فِى نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا ، وَمَنْ قَتَلَ نَفْسَهُ بِحَدِيدَةٍ ، فَحَدِيدَتُهُ فِى يَدِهِ ، يَجَأُ بِهَا فِى بَطْنِهِ فِى نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدًا مُخَلَّدًا فِيهَا أَبَدًا

যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করবেসে জাহান্নামে যাবে। সেখানে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবেসে তার বিষ তার হাতে থাকবে। জাহান্নামে সর্বদা সে ওইভাবে নিজেকে বিষ খাইয়ে মারতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে কোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে তার কাছে জাহান্নামে সে ধারালো অস্ত্র থাকবে যার দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে। [সহীহ বুখারী : ৫৪৪২মুসলিম : ১০৯]

কঠোর প্রকৃতি ও কটুভাষী লোক এবং যে ব্যক্তি মানুষের কাছে এমন বিষয় নিয়ে গর্ব-অহংকার প্রকাশ করে বেড়ায় প্রকৃতপক্ষে যা তার নিকট নেই

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ الْجَوَّاظُ ، وَلَا الْجَعْظَرِيُّ

কঠোর প্রকৃতি ও কটুভাষী লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং ঐ লোকও নয় যে এমন সব বিষয়ে মানুষের নিকট গর্ব-অহংকার প্রকাশ করে বেড়ায় প্রকৃতপক্ষে যা তার কাছে নাই। (আবু দাঊদহা/৪৮০১সহীহআলবানী)

ইবনে উমার (রাঃ) বলেনআল্লাহর রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “---আর তিন ব্যক্তি জান্নাতে যাবে নাপিতা-মাতার নাফরমান ছেলেমদপানে অভ্যাসী মাতাল এবং দান করার পর যে বলে ও গর্ব করে বেড়ায় এমন খোঁটাদানকারী ব্যক্তি। (আহমাদ ৬১৮০নাসাঈর কুবরা ২৩৪৩হাকেম ২৫৬২সহীহুল জামে৩০৭১)  অন্য বর্ণনায় আছে,

তিন শ্রেণীর লোকের জন্য আল্লাহ তাবারাকা অতা'আলা জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন। অব্যাহতভাবে মদ পানকারীপিতা-মাতার অবাধ্যজন এবং এমন বেহায়াযে তার পরিবারের অশ্লীলতাকে মেনে নেয়। (আহমাদ ৫৩৭২৬১১৩) হাদিস সম্ভারহাদিস নং ১৬৮০ হাদিসের মান: সহিহ হাদি

আম্মার ইবনু ইয়াসার (রাঃ) থেকে রসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর মানুষ কখনো জান্নাতে যাবে না।

(১) যে ব্যক্তি তার পরিবারে বেহায়াপনার সুযোগ দেয়।

(২) পুরুষের বেশধারী নারী।

(৩) নিয়মিত নেশাদার দ্রব্য পানকারী

(তাবরাণীতারগীব হা/৩৩৮১)। ঊপদেশহাদিস নং ৭৬ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

ইবনু ওমর (রাঃ) বলেনরসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি আল্লাহ তাআলা জান্নাত হারাম করেছেন। 

(১) সর্বদা মদপানকারী

(২) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান ও 

(৩) পরিবারে বেপর্দার সুযোগ দানকারী (দায়ূছ)’ (নাসাঈমিশকাত হা/৩৬৫৫)। 

ঊপদেশহাদিস নং ৭৭ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেনরসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না।(১) সর্বদা নেশাদার দ্রব্য পানকারী।

(২) আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্নকারী।

(৩) যাদুকে বিশ্বাসকারী (আহমাদমিশকাতহাদীছ ছহীহ হা/৩৬৫৬)। 

ঊপদেশহাদিস নং ৭৮হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেনরসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না। (১) সর্বদা মদপানকারী

(২) আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী

(৩) যাদুর প্রতি বিশ্বাসকারী (আহমাদমিশকাত হা/৩৬৫বঙ্গানুবাদ মিশকাত ৭ম খণ্ড হা/৩৪৮৯ মদের বিবরণ ও মদ্যপায়ীর প্রতি ভীতিপ্রদগণ অনুচ্ছেদ)।

ঊপদেশহাদিস নং ১৫৭ হাদিসের মান: সহিহ হাদিস

  • গুরুত্বপূর্ণ টিকা:

উপরোক্ত কাজগুলো কবীরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত। কবীরা গুনাাহে লিপ্ত ব্যক্তিরা যদি তওবা করার পূর্বেই মৃত্যু বরণ করে এবং আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা না করেন তবে তাদের পরিণতি জাহান্নাম। তবে আল্লাহ তায়ালা নিজ দয়া ও ইনসাফের ভিত্তিতে এদের মধ্যে যাকে খুশি ক্ষমা করে দিবেন যদি সে শিরক থেকে দূরে থাকে। কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেন:

إِنَّ اللَّـهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ

নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন নাযে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপযার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন।" (সূরা নিসা: ৪৮)

তাছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

من مات وهو يعلم أنه لا إله إلا الله دخل الجنة (رواه مسلم

যে ব্যক্তি এমন অবস্থায় মারা গেল যে, (জীবিত অবস্থায়) সে ভালো করে জানত, ‘আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন সত্য ও সত্যিকার মাবুদ নেইসে ব্যক্তি অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সহীহ মুসলিম)

আর যাদেরকে তিনি ক্ষমা করবেন না তাদেরকে তিনি জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন। পাপের শাস্তি ভোগ করার পর আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

অর্থাৎ তাওহীদপন্থী কবীরা গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তিরা প্রথম পর্যায়ে জান্নাতে প্রবেশকারীদের সাথে জান্নাতে প্রবেশ করবে না বরং জাহান্নামে গিয়ে শাস্তি ভোগ করার পর পরিশেষে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কোন তওহীদপন্থীই অন্যান্য কাফেরদের মত চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে অবস্থান করবে না। এটাই হলআহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের আকীদাহ। আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। 

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url