ঘুমানোর দোয়া বাংলা অর্থসহ - ঘুমানোর আগে বিশেষ আমল
মুমিনের প্রতিটি কাজই ইবাদত। ঘুমও এর ব্যতিক্রম নয়। ইসলামের নির্দেশিত নিয়মে মানুষ ঘুমালে তার ঘুমও ইবাদত হয়ে যায়। রাতে ঘুমানোর আগে কিছু করণীয় এবং করণীয় রয়েছে। সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো-
সুচিপত্রঃ ঘুমানোর দোয়া বাংলা অর্থসহ
- ঘুমানোর দোয়া বাংলা অর্থসহ
- রাতে দেরি করে ঘুমাবেন না
- একা একা ঘুমাবেন না
- খোলা আকাশের নিচে ঘুমাবেন না
- খাবার পাত্রে ঢেকে রাখা
- ঘরের দরজা বন্ধ রাখা
- পবিত্রতা অর্জন করা
- ঘুমানোর আগে বিছানাটা ঝেড়ে নেওয়া
- চোখের সাজসজ্জা করা
- ডান পাশে শুয়ে পরা
- আয়াতুল কুরসি পাঠ করা
- সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠা করা
- সূরা মুলক পাঠা করা
- সূরা হাশর পাঠা করা
ঘুমানোর আগে ও পরের দোয়া বাংলা অর্থসহ
তখন তিনি বলতেন-
اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا
উচ্চারণ- আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহিয়া।
অর্থ: 'হে আল্লাহ! তোমার নামে মরি, তোমার নামে জীবন পাই।
আর যখন তিনি (ঘুম থেকে) জেগে উঠতেন তখন বলতেন-
الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ
উচ্চারণ- 'আলহামদু লিল্লাহিল লাজি আহিয়ানা বা'দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।'
অর্থ: 'সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর পর জীবন দিয়েছেন এবং তাঁর কাছেই আমাদের পুনরুত্থান।'
আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে নবীজির ঘুমের এই ছোট্ট অনুশীলনকে তাদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
রাতে দেরি করে ঘুমাবেন না
রাসুল (সাঃ) ইশার নামাজের পর পরপর কথাবার্তা এবং গভীর রাত পর্যন্ত সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়ার জন্য লোকদেরকে তাগিদ দিতেন। (মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস: ৪৮৭৯)
একা একা ঘুমাবেন না
হাদিসে ঘরে একা ঘুমাতে নিষেধ করা হয়েছে। ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, “রাসূল (সাঃ) ঘরে একা রাত কাটাতে এবং একা ভ্রমণ করতে নিষেধ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৫৬৫০)
খোলা আকাশের নিচে ঘুমাবেন না
এই ধরনের ছাদে ঘুমানোও অনুমোদিত নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতে বেড়া ছাড়া ছাদে ঘুমায়, সে (কোন দুর্ঘটনার) জন্য (আল্লাহ) দায়ী নয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৪১)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমানোর জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, সেগুলো মেনে চললে একদিকে যেমন বিপদ থেকে মুক্তি পাবেন, অন্যদিকে প্রিয় নবীর সুন্নাত অনুসরণের সওয়াবও পাবেন। জাবের (রাঃ) এর সূত্রে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা রাতে পানীয়ের পাত্র ঢেকে রাখো।" ঘরের দরজা বন্ধ রাখুন। এবং সন্ধ্যায় আপনার বাচ্চাদের বাড়ির ভিতরে রাখুন, কারণ তখনই জ্বিনরা তাণ্ডব চালায় এবং দ্রুত কিছু দখল করে। ঘুমানোর সময় লাইট বন্ধ করুন। কারণ অনেক সময় ছোট ক্ষতিকারক ইঁদুর জ্বলে থাকা লবণের বাতিগুলো টেনে টেনে গৃহস্থদের পুড়িয়ে দেয়।' (সহীহ বুখারী, হাদীসঃ ৩৩১৬)
খাবার পাত্রে ঢেকে রাখা
রাতে ঘুমানোর আগে খাবারের পাত্র ঢেকে না রাখলে ইঁদুর, তেলাপোকা বা অন্যান্য পোকামাকড় আক্রমণ করতে পারে। ফলে তা থেকে মারাত্মক রোগ ছড়াতে পারে।
ব্ল্যাক ডেথ নামে ইতিহাসে একটি অধ্যায় রয়েছে, যেখানে প্রায় ১০০ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যে ইঁদুর দ্বারা ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস থেকে মারা গিয়েছিল। রাতে যখন আমরা ঘুমাই তখন ইঁদুরের আনাগোনা বেড়ে যায়। খাবার ঠিকমতো ঢেকে না রাখলে এগুলো আমাদের খাবারে এসে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
ঘরের দরজা বন্ধ রাখা
রাতে ঘুমানোর আগে ঘরের দরজা বন্ধ করা দরকার। কারণ রাতে দরজা খুলে ঘুমালে চোর-ডাকাতের কবলে পড়তে পারেন।
রাতে ঘুমানোর আগে লাইট, মোমবাতি, কয়েল ইত্যাদি নিভিয়ে দিতে হবে। কারণ এগুলো প্রায়ই আগুনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তা ছাড়া ঘুমের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে ঘর অন্ধকার করা জরুরি। কারণ অন্ধকার শরীর থেকে ঘুমের সময় মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়, যা বিশ্রামের ঘুমকে উৎসাহিত করে। মেলাটোনিন হল মাথার পিনিয়াল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একটি বিশেষ হরমোন, যা বুদ্ধিমত্তা বাড়ায়। মাথার কাজের ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়া এই হরমোন ক্যান্সার ও আলঝেইমার কমাতে সাহায্য করে। তাই ঘুমের সময় ঘর অন্ধকার রাখা খুবই জরুরি।
পবিত্রতা অর্জন করা
রাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘুমানো সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "কোন মুসলমান যদি রাতে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং অজু করার পর ঘুমাতে যায় এবং রাত জেগে আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করে, আল্লাহ তা দান করবেন।" (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৪২)
ঘুমানোর আগে বিছানাটা ঝেড়ে নেওয়া
রাসুল (সা.) বলেছেন, 'তোমাদের কেউ যদি বিছানায় যায়, সে যেন তার লুঙ্গি দিয়ে বিছানা নাড়ায়। কারণ বিছানায় তার অনুপস্থিতিতে বেদনাদায়ক কিছু আছে কিনা সে জানে না। তাহলে এই দোয়াটি পড়ুন- হে আমার রব! তোমার নামে আমি আমার দেহকে বিছানায় শুইয়ে দিলাম এবং তোমার নামেই আমি আবার উঠি।' (বুখারি, হাদিস : ৬৩২০)
চোখের সাজসজ্জা করা
ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর একটি সুরমাদানী ছিল। প্রতি রাতে (শুতে যাওয়ার আগে) ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন। (শামাঈল তিরমিযী, হাদীসঃ ৪১)
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুরমা চোখের জন্য সব ধরনের সংক্রামক রোগ ধ্বংস করে। এটি চোখে প্রবেশ করা ধুলাবালি এবং ক্ষতিকারক পদার্থ অপসারণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। দৃষ্টিশক্তি বাধাগ্রস্তকারী জীবাণু ধ্বংস করে। চোখের জ্বালা নিরাময় করে।
ডান পাশে শুয়ে পরা
তার মানে এই নয় যে আপনি সারা রাত বাম দিকে ঝুঁকতে পারবেন না। কিন্তু ইসলাম যেহেতু সকল নেক কাজে ডান দিককে প্রাধান্য দিতে বলেছে, তাই আমরা ঘুমানোর সময়ও ডান দিক থেকে শুরু করতে পারি। এ কারণে ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমালে আমাদের হৃৎপিণ্ড, পাকস্থলী, ফুসফুস ইত্যাদির অবস্থান স্বাভাবিক থাকে, যা বাম দিকে ঘুমানোর চেয়ে বেশি উপকারী।
ঘুমানোর আগে কিছু বিশেষ আমল
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি বিছানায় যাওয়ার পর আল্লাহর নাম স্মরণ করে না, আল্লাহ তাকে শাস্তি দেবেন।" (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৮৫৬)
হাদিস শরিফে ঘুমানোর আগে কিছু দোয়া করার কথা বলা হয়েছে। আপনি যদি সব নামাজ পড়তে না পারেন তবুও এই ছোট দোয়াটি পড়তে পারেন: 'আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহিয়া' অর্থাৎ 'হে আল্লাহ! তোমার নামে আমি ঘুমিয়েছি এবং তোমার রহমতে আমি আবার জাগ্রত হব।'
সূরা ইখলাস ও নাস-ফালাক পাঠ করা এবং শরীরে ফুঁ দেওয়া
আয়েশা (রাঃ) বলেন, "প্রতি রাতে যখন রাসুল (সাঃ) বিছানায় যেতেন, তখন তিনি উভয় হাত একত্রিত করতেন এবং সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করতেন এবং নাক ফুঁকতেন। তারপর মাথা ও মুখ থেকে শুরু করে স্পর্শ করতেন। যথাসম্ভব উভয় হাত দিয়ে শরীর তিনবার। (বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)
আয়াতুল কুরসি পাঠ করা
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যখন তুমি বিছানায় উঠবে তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমাদের একজন অভিভাবক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমাদের কাছে আসবে না।' (বুখারি, হাদিস: ২৩১১)
মুসলিম মাত্রই আয়াতুল কুরসী জানা অত্যবশ্যক। তাই আমাদের উচিত পবিত্র এ আয়াত মনে রাখা এবং অধিক পরিমাণে পাঠ করা। নিচে পবিত্র আয়াতুল কুরসি আরবি হরফে দেওয়া হল।
আরবি উচ্চারণ
اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ
বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম। লা তা’খুযুহু সিনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরদ্বি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ’ ই’ন্দাহূ ইল্লা বিইজনিহি। ইয়া’লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহিতূনা বিশাইয়্যিম্ মিন ‘ইলমিহি ইল্লা বিমা শা-আ’ ওয়াসিআ’ কুরসিইয়্যুহুস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বি, ওয়ালা ইয়াউ’দুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল ‘আলিইয়্যুল আ’জিম।
বাংলা অর্থ
আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোন তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতিত এমন কে আছে যে তাঁর নিকটে সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতুটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন তা ব্যতিত। তাঁর কুরসি সমগ্র আসমান ও জমিন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলির তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান।
সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠা করা
যদি কেউ ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই দুটি আয়াত পাঠ করে তবে তা তার জন্য সারা রাত নিরাপদ থাকার জন্য যথেষ্ট হবে। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করে।তবে এটাই তার জন্য যথেষ্ট। (বুখারি, হাদিস : ৫০৪০)
রাতে ঘুমানোর আগে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করলে তাহাজ্জুদের নামাজের সমান সওয়াব পাওয়ার আশা করা যায়।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করবে, তা তার জন্য যথেষ্ট হবে। " বুখারী ৫০১০, মুসলিম ৮০৭।
হজরত আবু মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতে সূরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করবে, এই দুটি আয়াতই তার জন্য যথেষ্ট হবে; অর্থাৎ সারা রাত সে জিন ও মানুষের অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকবে এবং প্রতিটি অপ্রীতিকর জিনিস থেকে সে নিরাপদ থাকবে। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম।
বাংলা উচ্চারণ
২৮৫. আমানুর-রাসুলু বিমা উনজিলা ইলাহি মির রাবিহি ওয়াল মুমিনুন। কুল্লুন আমানা বিল্লাহি ওয়া মালা-ইকাতিহি ওয়া কুতুবিহি ওয়া রুসুলিহি, লা নুফার-রিকু বাইনা আহাদিম-মির রুসুলিহি। ওয়া কালু সামি'না, ওয়া আতওয়া'না, গুফরা নাকা, রাব্বানা ওয়া ইলাইকাল মাসির।
২৮৬. লা উ কালিফুল্লাহু নাফসান ইল্লা উস-আহা। লাহা মা কাসাবাত ওয়া আ'লাইহা মাক তাসাবাত। রব্বানা লা-তু আখযীনা-ইন্না সিনা- আও আখ্ত্বোয়া'না। রাব্বানা ওয়ালা তাহমিল আ'লাইনা ইসরান কামা হা'মালতাহু আ'লাল্লাজিনা মিন ক্বাবালিনা। রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা-লা তাকাতালানা বিহ। ওয়া'ফু আন্না, ওয়াগ ফিরলানা, যুদ্ধ হা'মানা। আনতা মাওলানা, ফানছুরনা আ'লাল কওমিল কাফেরীন। (আমীন)।
বাংলা অর্থ:
২৮৫. রসূল বিশ্বাস করেন যা তার প্রতি তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে নাযিল করা হয়েছে, এবং সমস্ত মুসলমান আল্লাহ, তার ফেরেশতা, তার কিতাব এবং তার নবীদের প্রতি বিশ্বাস করে। তারা বলে আমরা তাঁর রসূলদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং মেনে নিয়েছি। হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা তোমার কাছে ক্ষমা চাই। তোমাকে নিজের কাছে ফিরে যেতে হবে।
২৮৬. আল্লাহ কাউকে তার সামর্থ্যের বাইরে কাজের বোঝা চাপিয়ে দেন না, সে যা অর্জন করে তাই পায় এবং সে যা করে তা তার উপরই বর্তায়। হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা যদি ভুলে যাই বা ভুল করি তবে আমাদেরকে অপরাধী করো না। হে আমাদের পালনকর্তা! আর আমাদের উপর এমন দায়িত্ব অর্পণ করবেন না যেভাবে আপনি আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর অর্পণ করেছিলেন, হে আমাদের পালনকর্তা! আর আমাদের দ্বারা সেই বোঝা বহন করবেন না যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই। আমাদের পাপ ক্ষমা করুন। আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি দয়া করুন। তুমি আমাদের প্রভু। সুতরাং কাফেরদের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করুন।(আমিন)
সূরা মুলক পড়া
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, কোরানে ৩০টি আয়াত বিশিষ্ট একটি সূরা আছে, যেটি কেউ সুপারিশ করলে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। সূরাটি হল তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক (সূরা মুলক)। (তিরমিযী, হাদিস: ২৮৯১) এই সূরাটি না পড়ে নবী (সাঃ) কখনো ঘুমাতে যাননি। (তিরমিযী, হাদিস : ২৮৯২)
সূরা হাশর পাঠা করা
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের বাংলা উচ্চারণ:-
উচ্চারণঃ হুআল্লা হুল্লাজি লা-ইলাহা ইল্লা হুয়া, আলিমুল গায়েবী ওয়াশ শাহাদতি, হুয়ার রাহমানুর রাহীম। হুআল্লাহ হুল্লাজি লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল মালিকুল কুদ্দুসুস সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল আজিজুল জাব্বারুল মুতাকাব্বির। ছুবহানআল্লাহি আম্মা ইউশরিকুন। হুআল্লাহুল খালিকুল বা-রিউল মুছাওভিরু লাহুল আসমাউল হুসনা। ইউছাব্বিহু লাহু মা ফিস-সামাওয়াতি ওয়াল আরদউ; ওয়া হুয়াল আজিজুল হাকিম।
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতের বাংলা অর্থ:-
অর্থ: 'তিনিই আল্লাহ তায়ালা, তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই; তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্য জানেন, তিনি পরম করুণাময়, অসীম দাতা।' (২২) 'তিনিই আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। একমাত্র তিনিই মালিক, পবিত্র, শান্তি ও নিরাপত্তা দাতা, আশ্রয়দাতা, পরাক্রমশালী, মহিমান্বিত, মহান। (২৩) 'তিনিই আল্লাহ, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, তাঁর কাছে সর্বোত্তম নাম। আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছুই তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী জ্ঞানী। (সূরা হাশর, আয়াত ২৪)
ইসলামের নির্দেশিত এ সব নিয়মে মানুষ ঘুমালে তার ঘুমও ইবাদত হয়ে যায়। আল্লাহ আমাদের বোঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুক, আমিন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url