শবে বরাত - এই বছর শবে বরাত কবে
প্রিয় পাঠক, আপনি কি শবে বরাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন, তাহলে এই আর্টিকেল আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে শবে বরাত সম্পর্কে
আলোচনা করা হয়েছে। তাই শবে বরাত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে শুরু থেকে
শেষ প্রজন্ত পড়ুন।
শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত হচ্ছে হিজরী শা'বান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যেবর্তী রাতে পালিত হয় শবে বরাত এর রাত, যে রাত মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত, যে রাতে মুসলমানরা সারারাত জেগে নফল নামাজ পড়ে ইবাদত করে কোরআন তেলোয়াত করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়।
ইসলামিক বিশ্বাস
মতে এই রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের কে বিশেষভাবে ক্ষমা করে দেন। বিশ্বের বিভিন্ন
স্থানে নফল ইবাদতের মাধ্যমে শবে বরাত পালন করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য, আবার শবে বরাত রাতে প্রার্থনার আয়োজন করা হয় মৃত পূর্বপুরুষদের জন্য
আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য।
আল্লাহতালা যেকোনো সময় তার বান্দার দোয়া প্রার্থনা কবুল করতে পারে। তারপরও বছরের এমন কিছু বিশেষ দিন সময় রয়েছে সে সময় গুলো মর্যাদা ও ফজিলত অন্য সময়ের তুলনায় বেশি। যে বিষয়গুলো মুসলমানদের মনে শবেবরাতে ইবাদত ও বেশি বেশি নেক কাজ করার আসা জাগিয়ে তোলে।
শবে বরাতের ফজিলত
আপনি কি শবে
বরাতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য কেননা আজকে
আর্টিকেলটিতে শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হয়েছে। চলুন তাহলে দেখে
নিন শবে বরাতের ফজিলত গুলো।
অর্জন আয়েশা
সিদ্দীকি (রা.) বলেছেন একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ
সময় নিয়ে সেজদায় পড়ে গেলেন যে আমার ধারণা হলো ত্রি মৃত্যু বরণ করেছেন তার পাশে
বৃদ্ধাঙ্গুলী দিলাম তার বৃদ্ধাঙ্গুলির নড়লো তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ
করে আমাকে লক্ষ্য করে বললেন হে আয়েশা! তুমি কি আশঙ্কা করেছ? আমি উত্তরে বললাম ইয়া রাসুল আল্লাহ (সা.)! আপনার দীর্ঘ সময় ধরে
সেজদায় পরে থাকা দেখে আমার আশঙ্কা হয়েছিল আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কি না? নবীজি (সা.) বলেন, তুমি কি জানো এটা কোন রাত?
আমি বললাম, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল ভাল
জানেন। তখন নবীজি (সা.) বলেন অর্ধশাবানের রাত এই রাতে আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি মনোযোগ দেন ক্ষমা প্রার্থনা কারীদের ক্ষমা
করে দেন। অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন (শুআবুল ইমান, তৃতীয় খন্ড পৃষ্ঠা ৩৮২)
হযরত আয়েশা
(রা.), থেকে বর্ণিত হয়েছে নবীজি (সা.) এ রাতে মদিনার
কবরস্থানে এসে মৃতদের জন্য দোয়া ও ইস্তেগফার করতেন। তিনি আরো বলেন, নবীজির (সা.) তাকে বলেছেন, এ রাতে ভেড়া
বোরকির পশমের সংখ্যার পরিমাণ এর চেয়েও বেশি সংখ্যক গুনাগার মানুষকে আল্লাহ ক্ষমা
করে দেন। (তিরমিজি শরিফ ,হাদিসঃ৭৩৯)।
শবে বরাতের আমল
ইমাম বায়হাকী
(রহ.) এই হাদিসটি বর্ণনার পর এর সনদের ব্যাপারে বলেছিলেন অথবা অতএব এই হাদীস
দ্বারা প্রমাণিত হয় যে এই রাতে দীর্ঘ সময় ধরে নফল নামাজ পড়া যাতে সেজদাও দীর্ঘ
সময় ধরেই হয়
তবে মনে রাখতে
হবে যে অনেক অনিভারযোগ্য বই-পুস্তকে নামাজের যে নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন লেখা আছে
অর্থাৎ হতে হবে প্রতি রাকাতে এই সুরা এতবার পড়তে হবে এগুলো ঠিক নয়। হাদীস শরীফে এসব নেই। এগুলো
মানুষের মন গড়া কথাবার্তা বা নিয়ম।
সঠিক পদ্ধতি হল নফল নামাজের
সাধারণত নিয়ম অনুযায়ী ২ রাকাত করে যত রাকাত সম্ভব হয় করতে থাকা। কুরআন
তেলাওয়াত করা দরুদ শরীফ পড়া ইস্তেগফার পড়া দোয়া করা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা
করা। এমন যেন না হয় যে সারারাতের দীর্ঘ ইবাদতের ক্লান্তিতে ফজরের নামাজ জামাতের
সাথে পড়া মিস না হয়ে জায়।
শবে বরাত কেন পালন করা হয়
শা'বান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যেবর্তী রাতকে শবে বরাত বলা হয়। শবে
বরাত কথাটি ফারসি থেকে এসেছে। শবে বরাত কথাটির অর্থ হলো মুক্তির যামিনী। শবে মানে
রাত, বরাত মানে মুক্তি। শবে বরাতকে আরবি ভাষায় 'লাইলাতুল বরকত'। হাদীস শরীফে যাকে শাবান মাসের
মধ্যে দিবসের রজনী বলা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন 'হা-মিম!
শপথ ! উজ্জ্বল কিতাবের নিশ্চয় আমি নাজিল করেছি এক বরকত ময়রাত ; আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এই
এই হল আপনার প্রভুর দয়া নিশ্চয়ই তিনি সব শুনেন ও সব জানেন। এই উভয়ের মাঝে যা
আছে সেসবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো, তিনি
ছাড়া কোন মাবুদ নেই তিনি জীবনে ও মৃত্যু দেন।
হজরত ইকরিমা (রা.) প্রমুখ কয়েকজন তফসিরবিদ থেকে বর্ণিত আছে , সুরা দুখানের দ্বিতীয় আয়াতে বরকতের রাত্রি বলে শবে বরাত বুঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরান)
শবে বরাত সর্ম্পকে হাদিস
১. নং হাদীস
عن معاذ بن جبل عن النبي صلى الله عليه و سلم قال :
( يطلع الله إلى خلقه في ليلة النصف من شعبان فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن
অনুবাদ: হযরত
মুআয ইবনে জাবাল রাদিআল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হরতাম উপরে ওয়াসাল্লাম লেখক- আল্লাহ তাআলা ১৫ই শাবানের রাত (শাবে
বারাআতে) এগিয়ে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক বিনেষ পোষণকারী ব্যতীত আর ক্ষমা
করেন।
এ তিনটির সনদ
ছহীহ। এ জন্য ইমাম ইবনে হিব্বান সহীহ গ্রন্থে প্লেগ কিবুস বর্ণনা করেছেন। ইমাম
মুনজিরী, ইবনে রজব, কাসতাল্লানী,
জুরকাবী, নুরুদ্দিন হাইসামী এবং
অন্যান্য সদস্য আলেমরা এই অংশের রচয়িতা। (তারগীব তারহীব ২/১১, ৩/৪৫৯ লাতাইফুল মাআরিফ ১৫১-৩, মাজমাউইয়াদ
৮/৬৫, শরহুল সাওয়াহিব-১০/৫৬১)
২ নং হাদীস
শবে বরাত পালন করা কি জায়েজ
১ নং হাদীস
হযরত আবু মুসা আশআরী (রা.) থেকে দল। স্থান
বিমানবন্দর ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা মধ্য শাবানের
রাত আত্মপ্রকাশ করেন। এবং মুশরিক হিংসুক ব্যাতক ও সকলকে বিরোধিতা করে (ইয়ে মাজাহ, সদস্য নং ১৩৯০, সংখ্যার মান হাসান সহীহ)
২ নং হাদীস
عن علي بن أبي طالب قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ( إذا كانت ليلة النصف من شعبان فقوموا ليلها وصوموا نهارها . فإن الله ينزل فيها لغروب الشمس إلى سماء الدنيا . فيقول ألا من مستغفر لي فأغفر له ألا من مسترزق فأرزقه ألا مبتلى فأعافيه ألا كذا ألا كذا حتى يطلع الفجر )
অনুবাদ: হযরত আলী বিন আবু তালিব (রা.) থেকে
বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন
শাবান অর্ধেকের রজনী আসে (শবে বরাত) তখন তোমরা সকালে কোরান পড়ো আর বেলা রোজা
রাখো। নিশ্চয় আল্লাহ এ রাতে সূর্যোদয়ের সাথে আমাদের আসমানে এসে বলেন, কোন গোনাহ কারী আছে কি আমার কাছে? আমি তাকে
ক্ষমা করে দিবো কোন রিজিক দাতা আছে কি? আমি তাকে রিজিক
দেব? কোন বিপদগ্রস্ত মুক্তি পেতে চান কি? আমি তাকে বিপদমুক্ত করে দেবো। এমন কি কেও আছে? এমন বলতে
থাকেন ফজর আজান প্রর্যন্ত ।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৩৮৮, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৮২২ ) হাদীসের মান জয়ীফ ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url