আজকের ইফতারের শেষ সময় ২০২৩
ইফতার (আরবি: إفطار ইফ্ত্বার্) হচ্ছে, রমযান মাসে মুসলিমগণ সারাদিন রোযা রাখার পর, সূর্যাস্তের সময় যে খাবার গ্রহণ করেন। রমজান মাসে সবাই একত্রে বসে ইফতার গ্রহণ করেন। খেজুর খাবার মাধ্যমে ইফতার শুরু করা সুন্নত। বাংলাদেশের বেশির ভাগ স্থানে পানি খাবার মাধ্যমে, আবার অনেক স্থানে ভেজা চাল মুখে দেবার মাধ্যমে ইফতারি শুরু করা হয়।
ইফতারের দোয়া
اللهم لك صمت و على رزقك افطرت
বাংলায় উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া তাওআক্কালতু আ'লা রিঝক্কিকা, ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
বাংলায় অর্থঃ হে আল্লাহ পাক! আমি আপনারই সন্তুষ্টির জন্য রোযা রেখেছি এবং আপনারই দেয়া রিযিক্ব দ্বারা ইফতার করছি।
ইফতার মানে রোজা ভঙ্গ করা। সূর্যাস্তের পর রোজা ভাঙার প্রথম খাবারকে 'ইফতার' বলা হয়, ভোর থেকে সারাদিন রোজা রাখার পর। যে খাবার বা পানীয় দিয়ে ইফতার করা হয় তাকে 'ইফতারি' বলে। ইফতারের সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা উত্তম। হাদিসে বর্ণিত আছে যে, রোজাদারের নামাজ আল্লাহর কাছে এতই আকর্ষণীয় যে রমজানে মহান আল্লাহ ফেরেশতাদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন, 'রমজানে তোমাদের পূর্বের দায়িত্ব মওকুফ করা হয় এবং নতুন দায়িত্বের আদেশ দেওয়া হয়, অর্থাৎ যখন আমি রোজা রাখি। বান্দারা দোয়া করো, তুমি বলো আমিন! আমীন!! বলতে থাকবে।' (মুসান্নাতে আবদুর রাজ্জাক)।
ইফতারের সময়সূচি ২০২৩
আল্লাহর সন্তুষ্টিই একজন মুমিনের জীবনের লক্ষ্য। আল্লাহ আনুগত্যে সন্তুষ্ট, তাই মুমিনরা ইবাদতে আনন্দ পায়। মহানবী (সা.) বলেছেন, 'রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে; একটি ইফতারের সময়, অন্যটি আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সময়।' (মুসলিম)। আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিলেন, তোমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা রাখ। (সূরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)। এ হুকুম পালনের আনন্দ ইফতারের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
ইফতার ও সাহরীর জন্য স্বাস্থ্যকর হালাল খাবার প্রয়োজন। কেননা হালাল খাদ্য ও হালাল উপার্জন রোজা, নামায ও সকল ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত। তাই ইফতার ও সাহরীর জন্য বৈধ উপার্জনের হালাল খাবার।
হাদিসে কুদসিতে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ ঘোষণা করেন, "আমি আমার বান্দাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি যারা তাদের ইফতার করে।" (তিরমিযী, আলফিয়াত আল-হাদিস: ৫৬০, পৃষ্ঠা: ১৩১)। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 'যখন সেই দিক থেকে রাত ঘনিয়ে আসে এবং দিনের শেষে সূর্য অস্ত যায়, তখন রোজাদার তার ইফতার করবে।' (বুখারী, অধ্যায় সাওম, হাদিস: ১৮৩০)। হজরত সাহল ইবনে সা'দ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'যতক্ষণ মানুষ ইফতার করবে ততক্ষণ তারা কল্যাণে থাকবে।' (বুখারী, অধ্যায় সাওম, হাদিস: ১৮৩৩)।
খেজুর দ্বারা রোজা ভঙ্গ করা সুন্নত; যেকোনো ফল দিয়ে রোজা ভাঙলেও সুন্নত পূর্ণ হবে। মিষ্টি দিয়ে ইফতার করলেও সুন্নত পালিত হবে। তা সম্ভব না হলে যে কোনো হালাল খাবার এমনকি পানি দিয়েও ইফতার করা যেতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে নয়, পানি দিয়ে ইফতার করবে। নিশ্চয় পানি বিশুদ্ধ।' (তিরমিযী ও আবু দাউদ; আলফিয়াত আল-হাদিস: ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)। দুধে পানি মিশিয়ে রোজা ভাঙার কথাও বলা হয়েছে। মাগরিবের নামাযের আগে ইফতার করা মুস্তাহাব বা উত্তম।
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত দুআ উত্তম। এ ছাড়া নিজের ভাষায় নামাজ পড়তে পারেন। ইফতারের আগে 'আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু' দুআ পাঠ করা সুন্নত। অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোজা রাখছি, তোমার রিজিকের জন্য রোজা ভঙ্গ করছি। (আবু দাউদ, অধ্যায় সাওম)।
রোজা ভঙ্গ করা যেমন উত্তম, তেমনি রোজা ভঙ্গ করাও বরকতময়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারের ইফতার করবে, তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে এবং সে রোজাদারের সওয়াবের সমান সওয়াব পাবে। কিন্তু সেই দ্রুততার সওয়াব কম হবে না। সাহাবা কিরাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! রোজাদারকে ইফতার করার সামর্থ্য আমাদের মধ্যে অনেকেরই নেই।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, কেউ যদি এক কাপ দুধ বা এক কাপ পানি বা খেজুর মিশিয়ে রোজাদারের রোজা ভঙ্গ করে তবে সে সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তার অন্তরের তৃপ্তি দান করবে, আল্লাহ তাকে আমার ঘরের কাওসার পান করাবেন, যাতে সে জান্নাতে প্রবেশ না করা পর্যন্ত তৃষ্ণার্ত হবে না।' (মুসনাদে আহমাদ)।
রমজান মাস সহানুভূতি ও সহানুভূতির মাস। তাই ব্যয়বহুল ইফতারের আয়োজন না করে প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, নিকটজন, গরীব-দুঃখী, অসহায়-অসহায়দের ইফতারের ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়। পথশিশু, এতিম ও পথচারীদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করাও ফরজ। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইফতার মাহফিল ও ইফতার পার্টির আয়োজন না করে গরিব-দুঃখীকে দান করাই সঙ্গত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "যে ব্যক্তি তার ইচ্ছামত খায় এবং পান করে এবং তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত রাত কাটায়, সে মুমিন নয়।" (মুসলিম)।
ইফতার ও সাহরীর জন্য স্বাস্থ্যকর হালাল খাবার প্রয়োজন। কেননা হালাল খাদ্য ও হালাল উপার্জন রোজা, নামায ও সকল ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত। তাই ইফতার ও সাহরীর জন্য চাই বৈধ উপার্জনের হালাল খাবার।
ইফতারের গুরুত্ব ও বিধান
ইফতার রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "হাদীসে কুদসীতে মহান আল্লাহ বলেছেন, 'আমার বান্দাদের মধ্যে যারা দ্রুত ইফতার করে তারাই আমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি। যখন সেই দিক থেকে রাত ঘনিয়ে আসে এবং দিন শেষ হয়। ওই দিকে এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার পর রোজাদার রোজা ভঙ্গ করবে (বুখারি, অধ্যায় সাওম, হাদিস: ১৮৩০)।'
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 'লোকেরা ইফতার না করা পর্যন্ত দ্বীন ইসলাম বিজয়ী হবে। কারণ ইহুদি ও খ্রিস্টানরা দেরিতে রোজা ভঙ্গ করত (মুসনাদে আহমদ)।' হজরত সাহল ইবনে সা'দ (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ নির্ধারিত সময়ে ইফতার করবে, ততক্ষণ তারা কল্যাণে থাকবে (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস : ১৮৩৩)।'
একজন মুমিনের জীবনের লক্ষ্য হল আল্লাহকে খুশি করা। আল্লাহ আনুগত্যে সন্তুষ্ট, তাই মুমিনরা ইবাদতে আনন্দ পায়। মহানবী (সাঃ) বলেছেন, “রোজাদারের জন্য দু’টি আনন্দ রয়েছে- একটি হল ইফতারের সময় এবং অন্যটি আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের সময়। আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, "তোমরা সন্ধ্যা (সূর্যাস্ত) পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করবে" (সূরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)।
ইফতার মানে রোজা ভঙ্গ করা। ভোর থেকে সারাদিন রোজা রাখার পর সূর্যাস্তের পর রোজাদার প্রথম যে খাবারটি ভঙ্গ করেন তাকে ইফতার বলে। যে খাবার বা পানীয় দিয়ে ইফতার করা হয় তাকে 'ইফতারি' বলে। ইফতারের আগে অপেক্ষা করা এবং সময়মতো ইফতার করা সুন্নত। ইফতারের সামনে দোয়া করলে আল্লাহ সেই দোয়া কবুল করেন।
হাদিসে বর্ণিত আছে, রোজাদারের নামাজ আল্লাহর কাছে এতই প্রিয় যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রমজানে ফেরেশতাদের কাছে ঘোষণা করেন, 'রমজানে তোমাদের পূর্বের দায়িত্ব মওকুফ করা হয়েছিল এবং নতুন দায়িত্বের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, অর্থাৎ যখন আমার রোজা রাখবে। বান্দারা নামাজ পড়ুন, আপনি বলুন আমিন! আমীন!! বলতে থাকবে (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক)।'
খেজুর দিয়ে রোজা ভঙ্গ করা সুন্নত
যেকোনো ফল দিয়ে রোজা ভাঙলেও সুন্নত পূর্ণ হবে। মিষ্টি দিয়ে রোজা ভাঙলেও সুন্নত পালন হবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে যে কোনো হালাল খাবার, এমনকি শুধু পানি দিয়েও ইফতার করা যেতে পারে। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 'তোমাদের কেউ যদি রোজা রাখে, সে যেন খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙ্গে, না খেজুর দিয়ে, পানি দিয়ে। নিশ্চয় পানি বিশুদ্ধ (তিরমিযী ও আবু দাউদ, আলফিয়াত আল-হাদিস: ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)। দুধে পানি মিশিয়ে রোজা ভাঙার কথাও বলা হয়েছে। মাগরিবের নামাযের আগে ইফতার করা মুস্তাহাব বা উত্তম।
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। এ ধরনের নামায উত্তম বলে কুরআন-হাদিসে উল্লেখ আছে। এ ছাড়া নিজের ভাষায় নামাজ পড়তে পারেন। ইফতারের আগে 'আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু' এই দোয়াটি পড়া সুন্নত। অর্থঃ হে আল্লাহ! তোমার জন্যই আমি রোজা রেখেছি, তোমার রিজিক দিয়ে রোজা ভঙ্গ করেছি (আবু দাউদ, অধ্যায় সাওম)। এছাড়াও বিভিন্ন কিতাবে বিভিন্ন দোয়া আছে, সে দোয়াগুলোও পড়া যায়। ইফতারের আগে এই দোয়া পড়তে হবে, 'ইয়া ওয়াছি আল-ফাদলি, ইগফির লি।' অর্থঃ হে ক্ষমাশীল! আমাকে ক্ষমা করুন (ইবনে মাজাহ)।
রোজা ভঙ্গ করা যেমন নেকী, তেমনি রোজা ভঙ্গ করাও বরকত। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে এবং সে রোজাদারের সওয়াবের সমান সওয়াব পাবে। তবে ওই রোজাদারের সওয়াব কম হবে না।
সাহাবা কিরাম বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! আমরা অনেকেই রোজাদারকে ইফতার করাতে পারি না। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "কেউ যদি এক কাপ দুধে বা এক কাপ খেজুর বা এক গ্লাস পানি মিশিয়ে রোজা ভঙ্গ করে তাহলে সে ঐ পরিমাণ সওয়াব পাবে।" আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তার অন্তরের তৃপ্তি অনুযায়ী খাওয়াবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে কাওসার ঘর থেকে এমন পানীয় পান করাবেন যে জান্নাতে প্রবেশ না করা পর্যন্ত তার তৃষ্ণার্ত হবে না (মুসনাদে আহমদ)।
রমজান হলো সহানুভূতি ও সহানুভূতির মাস। তাই ব্যয়বহুল বাহারি ইফতারের আয়োজন না করে প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, নিকটজন, গরীব-অসহায়দের ইফতারের ব্যাপারে সতর্ক ও সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়। পথশিশু, এতিম ও পথচারীদের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করাও কর্তব্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে ইফতার মাহফিল ও ইফতার পার্টির আয়োজন না করে গরিব-দুঃখীকে দান-খয়রাত করা বাঞ্ছনীয়।
ইফতার ও সাহরীর জন্য স্বাস্থ্যকর হালাল খাবার প্রয়োজন। কেননা হালাল খাদ্য ও হালাল উপার্জন রোজা, নামায ও সকল ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত। তাই ইফতার ও সাহরীর জন্য বৈধ উপার্জনের হালাল খাদ্য অপরিহার্য।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url