নামাজের আরকানসমূহ - নামাজের মাঝে করনীয় বিষয় কি কি

নামাজ শুরুর আগে করনীয় কাজগুলোকে আহকাম বলা হয়। নামাযের ভিতরে কিছু কাজ আবশ্যকীয় কাজ আছে,এগুলোকে নামাযের আরকান বলা হয়। নামাজের আরকান গুলোর মধ্যে যদি কোন একটি আরকাম ছুটে যায় তাহলে পুনরায় নামাজ আদায় করতে হয়, কিংবা সাহস সিজদা করতে হয়। তাই নামাজের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে নামাজের আহকাম ও আরকান গুলো যথা নিয়মে পালন করা হয়। আজকে আমরা জানবো নামাজের আরকান গুলো কি কি।নামাযের আরকান মোট ছয়টি। যথা-

নামাযের আরকানসমূহ নামাজের মাঝে করনীয়  বিষয় কি কি

০১. তাকবীরে তাহরীমা বলা

তাহরীমা শব্দে অর্থ হারাম করে দেয়া। আল্লাহু আকবার বলে নামাজ আরম্ভ করার সাথে সাথে আহার-পানাহার এবং নামাজের নির্দিষ্ট কাজ ও নির্দিষ্ট দোয়া কালাম ব্যতীত সকল কিছু হারাম করে দেয়া হয়। এজন্যই ইহাকে তাকবীরে তাহরীমা বলা হয়। নামাজ শুরু করার পর দুনিয়ার কোন বিষয়ের উপর খেয়াল রাখা যাবে না। শুধু আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থাকতে হবে।

০২. কিয়াম করা:

কিয়াম অর্থ দাঁড়ানো। দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা আবশ্যক। নামাজের ভেতর যেমন কিরায়াত পড়া ফরয তেমনি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করাও ফরয। তবে যদি কোন ব্যক্তি দাঁড়াতে অক্ষম হয়, তিনি বসে নামায আদায় করতে পারবেন। বসতে অক্ষম হলে শুয়ে এমন কি ইশারায় হলেও নামায আদায় করতে হবে।

০৩. কিরায়াত পাঠ করা:

নামাজের মধ্যে কুরআন থেকে কিছু অংশ পাঠ করাকে কিরায়াত বলা হয়। ছোট তিন আয়াত বা ছোট তিন আয়াত সমপরিমাণ এক আয়াত পাঠ করতে হবে। অন্যথা নামায হবে না। কেউ যদি ভুলক্রমে শুধু সূরা ফাতিহা পড়ে, তবে তার ফরয আদায় হবে। কিন্তু সূরা ফাতিহার সাথে যেহেতু অন্য সূরা মিলানো ওয়াজিব, সেহেতু না মিলানোর কারণে তাকে সাহু সিজদা দিতে হবে। ফরয নামাযের প্রথম দু’রাকাতে এবং অন্য সব নামাযের প্রত্যেক রাকাতে কিরায়াত পাঠ করা ফরয।

০৪. রুকু করা:

প্রত্যেক রাকাতে একটি করে রুকু করা ফরয। রুকুর সময় দু’হাত হাঁটুর উপর রেখে মাথা ঝুঁকিয়ে দিতে হবে, যাতে পিঠ এবং মাথা সমান তালে থাকে। হাঁটু খুব শক্ত করে ধরতে হবে। যদি এভাবে কারো রুকু করতে সমস্যা হয়, তাহলে যেভাবে সুবিধা হয়, সেভাবে রুকু করে নামায আদায় করবে।

০৫. সিজদা করা:

প্রত্যেক রাকাতে দু’টি করে সিজদা করা ফরয। হাত, কপাল, হাঁটু এবং পা মাটিতে রেখে সিজদা করতে হয়। নামাজের মধ্যে সেজদা না করলে নামাজ কবুল হবে না।

০৬. শেষ বৈঠক:

প্রত্যেক নামাজের শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পাঠ করতে যতটুকু সময় লাগে সেই সময় পর্যন্ত বসা ফরয। প্রত্যেক দুই দুই রাকাত নামাজের মধ্যে বসে তাশাহুদ পাঠ করতে হয়। যদি তাশাহুদ পাঠ না করা হয় তাহলে নামাজ হবে না। যদি মনের ভুলে তাশাহুদ না পড়া হয় তাহলে সাহস সিজদা দিতে হবে কিন্তু নামাজ ভঙ্গ করে পুনরায় পড়া উত্তম।

০৭. নামায ভঙ্গ করা:

শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দরূদ শরীফ, দোয়া মাসূরা পাঠ শেষে যে কোন কাজের দ্বারা সালাত ভঙ্গ করা ফরয। এটা আবু ইমাম আবু হানিফা [রাঃ] এর অভিমত। প্রত্যেক দুই রাকাত বা চার রাকাত নামাজ শেষে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হয়। যদি আমরা চার রাকাত নামাজের তিন রাকাত অথবা চার রাকাত নামাজ হয়ে যাওয়ার পর সালাম না প্রায় তাহলে নামাজ হবে না। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url