সুন্নত নামাজের গুরুত্ব এবং নামাজের মধ্যে সুন্নাত সমূহ
সুন্নত নামাজ
নামাজ বেহেস্তের চাবি। প্রতিটি মুসলিমের জন্য নামাজ পড়া ফরজ বা বাধ্যতামূলক। প্রতিদিন আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। ফরজ নামাজের পূর্বে এবং পরে দুই রাকাত, চার রাকাত করে যে নামাজ আদায় করি তাকে সুন্নত নামাজ বলে। নবী করীম ( সাঃ) বিনা ওজরে কখনো সুন্নত নামাজ পরিত্যাগ করতেন না। তিনি এবং সাহাবীগণ নিয়মিত সুন্নত নামাজ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করতেন।
সুন্নত নামাজের গুরুত্ব ও মর্যাদা
সুন্নত নামাজে গুরুত্ব অপরিসীম। হাশরের ময়দানে মহান আল্লাহ যখন আমাদের পাপ-পূর্ণের হিসাব গ্রহণ করবেন তখন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নিবেন। বিচার দিবসে আমাদের আমলনামা যদি কম হয়ে যায় তখন মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদের সুন্নত নামাজ দ্বারা তা পূরণ করবেন। অতএব, সুন্নত নামাজকে খুবই গুরুত্বসহকারে আমাদের আদায় করতে হবে।
আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,"রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,"যে ব্যক্তি নিয়ম নিষ্ঠভাবে দিন-রাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়বে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।জোহরের (ফরজ নামাজের) আগে চার রাকাত ও পরে দুই রাকাত, মাগরিবের পর দুই রাকাত, এশার পর দুই রাকাত এবং ফজরের (ফরজের) আগে দুই রাকাত।"[নাসাঈ, ইবনে মাজাহ:৫৭৭]
নামাজের সুন্নাত বলতে কি বুঝায়?
নামাজের মধ্যে কিছু করণীয় আছে যা পালন করা ফরজ বা বাধ্যতামূলক। পালন না করলে নামাজ আদায় হয় না, গুনাহ হয়। তা হচ্ছে নামাজের ফরজ। আরো এমন কিছু কাজ আছে, যা পালন করলে নামাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়, মানসিক শান্তি আসে, কিন্তু পালন না করলে নামাজ ভঙ্গ হয়ে যায় না তবে সাওয়াব কম হয়। নামাজের মধ্যে এ পালনীয় বিষয়গুলোকে সুন্নত বলে।। নবী করীম (সা:) নামাজের সুন্নাহ মেনেই নামাজ আদায় করতেন। আমাদেরও নামাজের সুন্নাহ গুলো সঠিকভাবে পালন করতে হবে। সুন্নাহ গুলো পালন করলে আমরা অধিক সাওয়াব পাব এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সুন্নাত কে অনুসরণ করা হবে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম কে অনুসরণ করলে আমরা হাশরের ময়দানে রাসুলের শাফায়াত পাব, ইনশাআল্লাহ।
নামাজের সুন্নাহ সমূহ...
০১. সময় হলে নামাযের জন্য আযান দেয়া।
০২. তাকবীরে তাহরীমা বলার সময় পুরুষের দু’হাত কান পর্যন্ত এবং স্ত্রীলোকের দু’হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠানো। ০৩. ইমাম হলে উচ্চস্বরে তাকবীর বলা। ০৪. মুক্তাদি হলে নিরবে তাকবীর বলা। ০৫. হাত উঠানোর সময় আঙুল সমূহ আলাদা করে রাখা। ০৬. তাকবীরে তাহরীমার পর পুরুষ নাভী বরাবর এবং মহিলাগণ বুকের উপর বাম হাতের উপর ডান হাত বাঁধা। ০৭. সানা পাঠ করা। ০৮. সানা পড়ে তাআ’য়ুজ ও তাসমিয়া পাঠ করা। ০৯. রুকুর মধ্যে মাথা ও পিঠ বরাবর রাখা। ১০. রুকু ও সিজদায় বেজোড় অর্থাৎ তিনবার/পাঁচবার করে তাসবীহ পাঠ করা। ১১. সিজদার সময় হাত ও পায়ের আঙুল সমূহ মিলিয়ে রাখা। ১২. নামাযের মধ্যে ওঠা বসার সময় তাকবীর অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলা। ১৩. সিজদার সময় দু’হাতের মধ্যখানে মাথা রাখা। ১৪. পুরুষের বেলায় সিজদার সময় জমিন হতে দু’হাতের কনুই পৃথক অর্থাৎ উঁচু করে রাখা। ১৫. মহিলাদের জন্য ছড়িয়ে দেয়া। ১৬. শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পর দরূদ শরীফ পাঠ করা। ১৭. রুকু করার সময় দু’হাত হাঁটুর উপর রাখা। ১৮. রুকু অবস্থায় থাকাকালীন পুরুষদের হাতের আঙুল গুলোকে পৃথক রাখা এবং নারীদের ক্ষেত্রে মিলিয়ে রাখা। ১৯. রুকু থেকে মাথা উত্তোলনের সময় সামি আল্লাহু লিমান হামিদাহ বলা। ২০. দাঁড়িয়ে রাব্বানা লাকাল হামদ বলা।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url