তিন রাকাত নামাযের নিয়ম

فَإِذا قَضَيتُمُ الصَّلاةَ فَاذكُرُوا اللَّهَ قِيامًا وَقُعودًا وَعَلى جُنوبِكُم فَإِذَا اطمَأنَنتُم فَأَقيمُوا الصَّلاةَ إِنَّ الصَّلاةَ كانَت عَلَى المُؤمِنينَ كِتابًا مَوقوتًا

বাংলা অর্থ: অতঃপর যখন তোমরা সালাত পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।

[আন নিসা:১০৩]

তিন-রাকাত-নামাযের-নিয়ম

সকল মুসলিমদের জন্য নামাজ ফরজ। কাফের ও মুসলিমদের মধ্যে নামাজ হচ্ছে পার্থক্যকারী। আল্লাহ সুবাহানাতালা নামাজ কায়েম করতে বলেছেন। ফজর ,যোহর, আসর, মাগরিব,এশা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত আমাদের নামাজ আদায় করতে হয়। মাগরিব এর ফরজ এবং এশার বেতের নামাজ তিন রাকাত করে আদায় করতে হয়।

তিন রাকাত নামাজের নিয়ম

• নামাযের জায়গায় সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে

• যে ওয়াক্তের যে নামায আদায় করা হচ্ছে, সে ওয়াক্তের সেই নামাযের নিয়ত করে দাকবীরে তাহরীমা আল্লাহু আকবার বলতে হবে। এটা বলার সময় দু’হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে পুরুষদের ক্ষেত্রে দু’হাত নাভীর উপর বাঁধতে হবে আর নারীদের ক্ষেত্রে দু’হাত বুকের উপর বাঁধতে হবে। • প্রথমে সানা (সুবহানাকা আল্লাহুম্মা....) পাঠ করতে হবে। • এরপর সুরা ফাতিহা (আলহামদু শরীফ) পাঠ করে আমীন বলে আবার বিসমিল্লাহি .... পাঠ করে কুরআনের যে কোন সূরা অথবা সূরার অংশ বিশেষ পাঠ করতে হবে। • অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে এবং রুকুতে গিয়ে কমপক্ষে তিনবার রুকুর তাসবীহ “সুবহানা রাব্বিআল আজীম” পাঠ করতে হবে। তাসবীহ পাট শেষে “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলতে হবে। • অতঃপর আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় গিয়ে কমপক্ষে তিনবার সিজদার তাসবীহ (সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা) পড়ে আল্লাহু আকবার বলে সোজা হয়ে বসতে হবে। একইভাবে পরপর দুইবার সিজদাহ করতে হবে। • এরপর দাঁড়িয়ে আগের মতো তাসমীহ (বিসমিল্লাহ) পাঠ করে সূরা ফাতিহা পাঠ শেষে আমীন বলে আবার বিসমিল্লাহ পাঠ করে কুরআনের যে কোন সূরা বা অংশ বিশেষ পাঠ করে রুকুতে যেতে হবে। রুকুতে গিয়ে আগের মত তাসবীহ পাঠ করে দাঁড়াতে হবে। • এরপর দাঁড়িয়ে তাহমীদ (সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ) পাঠ করে আল্লাহু আকবার বলে সিজদায় যেতে হবে। সিজদায় গিয়ে পূর্বের মত তাসবীহ পাঠ করে আল্লাহু আকবার বলে সোজা হয়ে বসতে হবে। • আবার আগের মত আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় সিজদায় গিয়ে তাসবীহ পাঠ শেষে আল্লাহু আকবার বলে উঠে বসতে হবে। • বসার পর আত্তাহিয়্যাতু পাঠ শেষে আল্লাহু আকবার বলে সোজা দাঁড়াতে হবে। দাঁড়ানোর পর আবার বিসমিল্লাহি পাঠ করে সূরা ফাতিহা পাঠ শেষে করতে হবে।

তাশাহুদ:

لتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

“আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত-তাইবাতু। আসসালামু আলাইকা আইয়ুহান্নাবিয়্যু ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু”।

বাংলা অর্থ:“সকল মৌখিক ইবাদত মহান আল্লাহর জন্য! হে নবী, আপনার প্রতি শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। আমাদের ওপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসুল”

• ফরয নামায না হলে সূরা ফাতিহার পর আরেকটি সূরা মিলাতে হবে। • বিতরের নামায হলে তৃতীয় রাকাতে রুকু সেজদার আগে পুনরায় একটি তাকবির দিয়ে হাত বাঁধতে হবে এবং দোয়া কুনুত পাঠ করতে হবে। • এরপর রুকু-সিজদা করে উঠে না দাঁড়িয়ে শেষ বৈঠকে বসতে হবে। বসার পর আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করতে হবে। আত্তাহিয়্যাতু পাঠ করার পর দরূদ শরীফ, দোয়া মাসূরা পাঠ করে ডানে বামে সালাম ফিরায়ে নামায শেষ করতে হবে।

দোয়া মাসুরার 

"আল্লাহুম্মা ইন্নি জালামতু নাফসি জুলমান কাসিরা। ওয়ালা ইয়াগ ফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা। ফাগফির লি, মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা; ওয়ার হামনি, ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম।"

অর্থ:"হে আল্লাহ! আমি নিজের উপর অনেক জুলুম করেছি। আর আপনি ছাড়া গুনাহ ক্ষমাকারী আর কেউ নেই। আপনি নিজ অনুগ্রহে আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি রহম করুন। নিঃসন্দেহে আপনিই ক্ষমাকারী, করুণাময়।" [সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮৩৪; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৭০৫]


বিশেষ দ্রষ্টব্য: ফরজ নামাজ যদি মসজিদে আদায় করেন, তাহলে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম সাহেব যা তেলাওয়াত করবে তা মন দিয়ে শ্রবণ করতে হবে। অনেক মহাদ্দিস এবং আলেমগণ ফতোয়া দিয়েছেন যে, ইমাম সাহেব এর পিছনে মুসল্লির সুরা ফাতেহা পাঠ করা জরুরী না।

আল্লাহ তাআলা আমাদের হেদায়েত দান করুক এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুক,আমিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url