ইসলাম ধর্মে বাল্যবিবাহ

  

ইসলাম-ধর্মে-বাল্যবিবাহ

অনুবাদকের ভূমিকাঃ

 একটি সভ্য ও সুষ্ঠু সমাজ বিনির্মাণের জন্য ইসলাম বিবাহে উৎসাহ দেয়, জেনা-ব্যাভিচার থেকে নিষেধ করে। বিবাহের ক্ষেত্রে ইসলাম বয়সের কোনো সীমা বেধে দেয়নি। ইসলাম দ্রুত বিবাহে উৎসাহ দেয়। ইসলামবিরোধীরা প্রশ্ন তোলেঃ ইসলাম কি তবে বাল্যবিবাহ করতে বলে?
 ইসলামে কি এমন বিধান আছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর? 

ইসলামবিরোধীদের এ সংক্রান্ত প্রশ্ন দেখে যারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন, এই প্রবন্ধের আলোচনা তাদের জন্য উপকারী হবে ইন শা আল্লাহ।

 

ফতোয়া নং ১৭৮৩১৮ : ইসলামে অল্পবয়স্ক বালক-বালিকার বিবাহের বিষয়টি “সুস্পষ্ট কল্যাণ নিহীত আছে” - এমন শর্তের অধীন

 ◘ প্রশ্নঃ

আমি জানতাম যে ইসলামী আইন অনুযায়ী একজন মেয়ে যদি বালেগা হয় তাহলে সে বিয়ে করতে পারে, তার বয়স ৯ হোক, ১১ হোক বা ১৫ হোক। শরিয়তে কি তার আবেগ ও মানসিক পরিপক্কতাকে বিবাহের শর্ত হিসাবে বিবেচনা করা হবে? নাকি শুধুমাত্র সন্তান ধারনের সক্ষমতার বিষয়টিই বিবেচিত হবে? আমি এই ভেবে চিন্তাগ্রস্ত হচ্ছি যে, যেসব মেয়ে বালেগা হয়, তাদেরকে বিবাহ এবং মা হবার জন্য পুরোপুরি তৈরি বলে ধরে নেয়া হয় কেননা তারা শারিরিকভাবে এর জন্য তৈরি। তার আবেগ ও মানসিকভাবে তৈরি হবার বিষয়টিও কি সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়? আরো একটি জিনিস। ইসলামী শরিয়ত কি ছেলেদের ক্ষেত্রেও এটা বলে যে সে বালেগ হলেই বিয়ে করতে পারবে?

 ◘ উত্তরঃ

যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

 ■ প্রথমতঃ

কোনো ব্যক্তির জন্য তার অল্পবয়স্ক ছেলেকে বিয়ে দেয়া জায়েজ। এমনকি সে যদি বালেগ নাও হয়ে থাকে। সেই ব্যক্তির জন্য তার অল্পবয়স্ক মেয়েকেও বিয়ে দেয়া জায়েজ যদিও সেই মেয়ে বালেগা না হয়ে থাকে। এ ব্যাপারে ইজমা বর্ণিত আছে। তবে এটিও উল্লেখযোগ্য যে, বিবাহের উপযুক্ততা বা সক্ষমতারর বিষয়টিও বিবেচনা করা হয়। এবং সেই বিবাহের দ্বারা সত্যিকার অর্থেই কল্যাণ আছে কিনা এটিও দেখা হয়।

 ইবন আব্দুল বার(র.) বলেছেনঃ

উলামাগণ সর্বসম্মতভাবে একমত যে, একজন বাবা তার অল্পবয়স্ক কন্যার সাথে আলাপ না করেই তাকে বিয়ে দিতে পারেন। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আয়িশা(রা.)কে বিয়ে করেন যখন তাঁর বয়স ছিলো ৬ বছর।

[উদ্ধৃতি সমাপ্ত; আত-তামহিদ ১৯/৯৮]

 ইসমাঈল ইবন ইসহাক(র.) বলেছেন,

একজন বাবা তার অল্পবয়স্ক কন্যাকে বিয়ে দিতে পারেন। কন্যাকে এই আদেশ পালন করতে হবে। এ ব্যাপারে মুসলিমদের ইজমা রয়েছে।

[উদ্ধৃতি সমাপ্ত; আত-তামহিদ ১৯/৮৪]

 অবশ্য ইবন শুবরুমাহ(র.) এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। আমরা নিচে এ ব্যাপারে আলোচনা করবো।

 ■ দ্বিতীয়তঃ

প্রাধান্যযোগ্য সুস্পষ্ট উপকারিতার সম্ভাবনা ছাড়া অল্পবয়সী মেয়েকে বিয়ে দেয়া শরিয়তসম্মত নয়। অল্পবয়সী ছেলের জন্যও একই বিধান। তবে বিধানটি বালিকার ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্বপূর্ণ কেননা তালাক দেবার ক্ষমতার অধিকারী ছেলেরা।

 ইমাম নববী(র.) বলেছেন,

“উল্লেখযোগ্য যে, ইমাম শাফিঈ(র.) এবং তাঁর সাথীরা বলেছেন, “পছন্দনীয় (বিধান) হচ্ছে, একজন পিতার জন্য তার কুমারী কন্যাকে বালেগা হবার আগ পর্যন্ত বিয়ে দেয়া ঠিক নয়। তিনি কন্যার নিকট থেকে সম্মতি নেবেন। যাতে সে ঐ বিয়ের দ্বারা কোনো তিক্ততার ফাঁদে আটকে না যায়।” এই অভিমত আয়িশা(রা.) সম্পর্কিত হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। কারণ এখানে তাঁরা বোঝাতে চেয়েছেন - কোনো সুস্পষ্ট কল্যাণ না থাকলে সে তাকে বালেগা হবার পূর্বে বিয়ে দেবে না। আর যদি বিলম্বের দ্বারা এই কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবার আশঙ্কা থাকে, যেমনটি আয়িশা(রা.) সংক্রান্ত হাদিসে দেখা যায় [আল্লাহর রাসুলের(ﷺ) সঙ্গে বিয়ে], সেক্ষেত্রে এই কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হওয়া উচিত হবে না। কারণ পিতার দায়িত্ব হচ্ছে সন্তানের কল্যাণের দিকে খেয়াল রাখা, একে উপেক্ষা না করা।

[উদ্ধৃতি সমাপ্ত; শারহ মুসলিম ৯/২০৬]

 শায়খ ইবন উসাঈমিন(র.) এর অভিমত হচ্ছে, যে মেয়ের বয়স ৯ বছর পার হয়েছে তার থেকে (বিয়ের জন্য) অনুমতি নিতে হবে।  তিনি বলেছেন, এই অভিমতকে শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া(র.) প্রাধান্য দিয়েছেন এবং এটিই সঠিক অভিমত। যে মেয়ের বয়স ৯ বছরের থেকে কম, তার ক্ষেত্রে তিনি এই মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন যে – তার বাবা তাকে বিয়ে দেবেন না। তিনি ইবন শুবরুমাহ(র.) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেনঃ বালেগা হবার পূর্বে বালিকাকে বিয়ে দেয়া জায়েজ নয়। কারণ, যদি আমরা বলি তার সম্মতি হচ্ছে শর্ত তাহলে তো এখানে তার সম্মতি গণনাযোগ্য হচ্ছে না (কারণ সে বালেগা হয়নি)। আর যখন সে বালেগা হয়, তাকে (তার সম্মতি ব্যতিত) জোর করে বিয়ে দেয়া যাবে না। এটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়। শায়খ বলেছেন, এটিই সঠিক কথা। একজন বাবা বালেগা না হলে তার মেয়েকে বিয়ে দেবেন না। আর সে যখন বালেগা হবে, তার অসন্তুষ্টিতে তাকে বিয়ে দেয়া যাবে না।

 তবে ধরা যাক এমন হলো যে তিনি আশঙ্কা করছেন তিনি বৃদ্ধ এবং কিছুদিনের মধ্যেই মারা যাবেন। এ অবস্থায় তিনি (মেয়ের জন্য) উপযুক্ত পাত্র পেয়ে গেছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন যে তিনি মারা যাবার পর মেয়ের অভিভাবকত্ব তার ভাইদের কাছে চলে যাবে, তারা মেয়েটার সাথে কারসাজি করবে। তারা তার ভালোর কথা চিন্তা না করে নিজেদের খেয়ালের বশে তাকে বিয়ে দেবে। এই ক্ষেত্রে যদি তিনি কাউকে মেয়েটির জন্য উপযুক্ত মনে করেন, তাহলে (বিয়ে দিতে) কোনো সমস্যা নেই। তবে সে যখন পূর্ণবয়স্ক হবে, তাকে নিজের বেছে নেবার স্বাধীনতা দিতে হবে। যে যদি চায়, তাহলে বলতে পারবেঃ “আমি রাজি নই, আমি ইচ্ছুক নই”। 

 আরো পড়ুন : নবী কি ৯ বছর বয়সী আয়েশা (রা:) সঙ্গে সহবাস করেছিলেন

পরিস্থিতি যদি এমন হয়, তাহলেও সব থেকে নিরাপদ পন্থা হলো মেয়েটিকে বিয়ে না দেয়া এবং মহান আল্লাহর ভরসায় ছেড়ে দেয়া। হয়তো এ মুহূর্তে তিনি ঐ পাত্রকে উপযুক্ত মনে করছেন, কিন্তু এমনও তো হতে পারে যে সময়ের সাথে সাথে লোকটা বদলে গেলো। এবং মেয়েটা যখন বিয়ের বয়সে পৌঁছাবে তখন আল্লাহ হয়তো তাকে এমন একজন মানুষের সন্ধান দেবেন যে ঐ লোকের থেকেও উত্তম হবে। কেননা সব কিছুই তো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার হাতে।

[উদ্ধৃতি সমাপ্ত; শারহুল মুমতি’, ১২/৫৭-৫৯]

শায়খ(র.) ছেলেদের ক্ষেত্রেও এই অভিমতকে প্রাধান্য দিয়েছেন যে, বালেগ হবার পূর্বে ছেলেকেও বিয়ে দেয়া উচিত নয়।

[শারহুল মুমতি’, ১২/৫৩]

 ছোট বালিকার সঙ্গে সহবাস করার ক্ষেত্রে, শুধুমাত্র বিবাহের চুক্তির দ্বারাই এটি বৈধ হয়ে যায় না। স্বামী তার সঙ্গে সহবাস করবে না যতক্ষণ না সে সঙ্গমের জন্য উপযুক্ত হয়। এর জন্য বালেগ হওয়া শর্ত নয়। এটা পরিবেশ এবং সময়ভেদে ভিন্ন হয়। শরিয়া এক্ষেত্রে শারিরীক উপযুক্ততার দিকে দৃষ্টিপাত করে। 

 ■ তৃতীয়তঃ

এই মাসআলায় মুসলিম ফকিহদের বক্তব্য থেকে এটি স্পষ্ট যে, অল্পবয়স্ক বালিকার বিয়ের বিষয়টি প্রাধান্যযোগ্য সুস্পষ্ট উপকারিতার উপর নির্ভরশীল। যদি এমন সুস্পষ্ট উপকারিতার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে তার অভিভাবকেরা বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু প্রাধান্য দেয়া যায় এমন স্পষ্ট উপকারিতার সম্ভাবনা না থাকলে অল্পবয়স্ক অবস্থায় তাকে বিয়ে দেয়া যাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত সে সে নিজেই (পাত্র) বাছাই করতে পারবে এবং সন্তুষ্ট থাকবে।

 এটা তার অধিকার হরণ নয়। কোনো (অল্পবয়স্ক) এতিমের সম্পদ থেকে তার জন্য তার অভিভাবক ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারেন। এখানে তার অনুমতি নেয়া জরুরী নয়, যদি এখানে তার জন্য প্রাধান্যযোগ্য সুস্পষ্ট উপকারিতা থেকে থাকে। আর এটা যদি তার এবং তার সম্পদের জন্য অধিক কল্যাণকর হয়।

এখানে অল্পবয়স্ক বালকের ক্ষেত্রেও অল্পবয়স্ক বালিকার অনুরূপ বিধান। অভিভাবকের জন্য তার কল্যাণের দিকটি বিবেচনায় রাখা জরুরী।

 শরিয়া যাদেরকে অন্য কারো পক্ষ থেকে কিছু করবার বা অভিভাবকত্ব করার অনুমতি দিয়েছে এমন সব ক্ষেত্রেই এই বিধানগুলো প্রযোজ্য। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া(র.) বলেছেনঃ

“যদি কারো অন্য কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে সম্পদ অথবা অন্য কিছু দেখাশোনা করা বা অভিভাবকত্ব করার ক্ষমতা থাকে, তাহলে তার জন্য যা ইচ্ছা সেটাই করা বৈধ নয়। তাকে (যার দায়িত্বে আছেন) তার জন্য সব থেকে উত্তম হয় এমন কিছুই সব সময় বেছে নিতে হবে।”

[উদ্ধৃতি সমাপ্ত; মুখতাসার ফাতাওয়া আল মাসরিয়্যাহ ৭৯৬]

 এ ছাড়া এখানে মানসিক দিকটিকেও বিবেচনায় রাখা জরুরী। কারণ চারিত্রিক দিকগুলো দেখে একজন নারীর জন্য উপযুক্ত পাত্র বেছে নেয়া এবং বিয়ের জন্য সঠিক সময়ের দিকে লক্ষ রাখা নিঃসন্দেহে সেই নারীর প্রাকৃতিক ও মানসিক দিকের প্রতি লক্ষ রাখার শামিল। এখানে মানসিক দিক বলতে তরুণ-তরুণীর মধ্যে সংঘটিত প্রেম-ভালোবাসা ও মোহের কথা বলা হচ্ছে না। এ জাতীয় ধারণা এবং সম্পর্কগুলো এক জিনিস, আর জীবনের বাস্তবতা আরেক জিনিস। এইসব সম্পর্কের দ্বারা যেসব বিবাহ সংঘটিত হয়েছে এর অনেকগুলোই ব্যার্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। পাত্র বা পাত্রীর সাথে আগে থেকে পরিচয় না থাকার পরেও অনেক বিয়ে সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ তাদের মাঝে সম্প্রীতি, ভালোবাসা এবং প্রশান্তি সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এবং তারা সুখেশান্তিতে এভাবেই জীবন অতিবাহিত করেছেন এবং আল্লাহই সর্বোত্তম জানেন।

 আরো পড়ুন : নারী শিক্ষা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি।

মূল ফতোয়ার লিঙ্কঃ

○ আরবিঃ https://islamqa.info/ar/178318/

○ ইংরেজিঃ https://islamqa.info/en/178318/

অথবা https://web.archive.org/web/20160813055018/https://islamqa.info/en/178318 (আর্কাইভকৃত)

 

অনুবাদকের টিকা

[1] আবূ সালামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) তাদের কাছে বর্ণনা করেন যে, নাবী(ﷺ) বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে তার সম্মতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী মহিলাকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! কেমন করে তার অনুমতি নেয়া হবে। তিনি বললেন, তার চুপ থাকাটাই হচ্ছে তার অনুমতি। [ মুসলিম ১৬/৮, হাঃ ১৪১৯, আহমাদ ৯৬১১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬০)

https://hadithbd.com/hadith/link/?id=29699

[2] খানসা বিনতে খিযাম আল আনসারিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, যখন তিনি বয়স্কা ছিলেন তখন তার পিতা তাকে শাদী দেন। এ শাদী তার পছন্দ ছিল না। এরপর রাসুলুল্লাহ(ﷺ)  এর কাছে গেলে তিনি এ শাদী বাতিল করে দেন।

[সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৪৭৬২]

https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=5068

[3] রাসূল(ﷺ) বলেছেন: "ক্ষতি করা উচিত নয়, আর ক্ষতির সম্মুখীন হওয়াও উচিত নয়।"

[ইবন মাজাহ, হাদীস নং: ২৩৪১; আদ্-দারা-কুতনী, হাদীস : ৪/২২৮; ইমাম নববীর চল্লিশ হাদিস, হাদিস নং : ৩২ (হাসান)]

https://hadithbd.com/hadith/link/?id=21677

 ➫ মূলঃ শায়খ মুহাম্মাদ সালিহ আল মুনাজ্জিদ

➫ অনুবাদঃ মুহাম্মাদ মুশফিকুর রহমান মিনার

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url