নিজেকে সুখী রাখার উপায়; গৌতম বুদ্ধের শিক্ষণীয় গল্প

আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা গৌতম বুদ্ধের জীবনী থেকে তিনটি শিক্ষনীয় গল্প জানবো। যা আমাদের জীবনকে ইতিবাচক পরিবর্তন করতে সাহায্য করবে।

নিজেকে-সুখী-রাখার-উপায়;-গৌতম-বুদ্ধের-শিক্ষণীয়-গল্প

একা বাঁচতে শিখুন

একদিন একটা লোক গৌতম বুদ্ধের কাছে এসে বলেন, "প্রভু আমার মনে অনেক কষ্ট। আমাকে এ থেকে বাঁচার পথ বলে দিন। এমন ভাবে বলবেন যাতে আমার বুঝতে সুবিধা হয়। গৌতম বুদ্ধ তাকে  বললেন" তোমার কি সন্তান আছে?" লোকটি বলল 'হ্যাঁ',আছে। এরপর গৌতম বুদ্ধ বললেন "তোমার ভাইয়ের কি কোন সন্তান আছে?" লোকটি বলল, "হ্যাঁ,আছে।" গৌতম বুদ্ধ আবার প্রশ্ন করলেন "তোমার প্রতিবেশীর কি কারো সন্তান আছে?" লোকটি বলল, "হ্যা,আছে। গৌতম বুদ্ধ পুনরায় জিজ্ঞেস করলেন "তোমার পরিচিত না এমন কারো কি সন্তান আছে?" লোকটি বলল,"হ্যাঁ, এমন অনেকে আছে যাদের আমি চিনি না কিন্তু তাদের সন্তান আছে।"
এরপর গৌতম বুদ্ধ লোকটিকে বললেন," ধরো তোমার সন্তান যদি মারা যায় তাহলে তোমার কতটা কষ্ট হবে।"
লোকটি বলল, "প্রভু আমার অনেক কষ্ট হবে। আমার সন্তান ছাড়া আমার কাছে পৃথিবীটা মূল্যহীন মনে হবে, আমি আমার সন্তানকে ছাড়া থাকতে পারবো না। এটা আমি কখনো সহ্য করতে পারবো না। হয়তো আমি, তাকে হারানোর বেদনায় নিজে আত্মহনন ও করতে পারি।"
গৌতম বুদ্ধ আবার জিজ্ঞেস করলেন, "তোমার ভাইয়ের সন্তান মারা গেলে তোমার কতটা কষ্ট হবে?" লোকটি বলল "আমার অনেক কষ্ট হবে। কিন্তু যতটা কষ্ট আমার সন্তান হারানোর জন্য হবে ততটা কষ্ট হবে না।'এরপর গৌতম বুদ্ধ আবার জিজ্ঞেস করেন "যদি তোমার প্রতিবেশীর সন্তান মারা যায়, তাহলে তোমার কতটা কষ্ট হবে?"
লোকটি গৌতম বুদ্ধকে বলে আমার প্রতিবেশী সন্তান মারা গেলে আমার কষ্ট হবে । কিন্তু,ততটা কষ্ট হবে না যত কষ্ট আমার ভাইয়ের সন্তান মারা গেলে হবে।
গৌতম বুদ্ধ পুনরায় জিজ্ঞেস করে " ঐ লোকটির সন্তান মারা গেলে তোমার কেমন কষ্ট হবে, যাকে তুমি ব্যক্তিগতভাবে চেনো না?"
লোকটি বলে "আমার কোন কষ্টই হবে না, কারণ আমি তাকে চিনি না।"
এরপর গৌতম বুদ্ধ লোকটিকে আবারো প্রশ্ন করে "এবার তুমি বলো তাহলে আমাদের দুঃখ কিসের উপর নির্ভর করে?"
লোকটা একটু ভেবে বলল 'প্রভু, আমাদের কষ্ট কতটা হবে এটা নির্ভর করে, আমরা সামনের লোকটিকে কতটা ভালবাসি। অর্থাৎ, তার সঙ্গে আমরা কতটা জড়িয়ে আছি, কতটা আপন ভাবি, কতটা ভালোবাসি তার উপরে নির্ভর করে।
এরপর গৌতম বুদ্ধ বললেন "আচ্ছা ঠিক আছে। ধরো, তুমি তোমার সন্তানকে নিয়ে সমুদ্রের পাড়ে বেড়াতে গেলে। তোমার সন্তান সমুদ্রের পাড়ে বালি নিয়ে খেলা করবে তাই না"
 লোকটি একটু ভেবে বললো, হ্যাঁ, অবশ্যই। সে তো ছোট, বালি নিয়ে খেলা করবেই।
এরপর গৌতম বুদ্ধ বললেন, "সমুদ্র থেকে আসা ঢেউ যখন তোমার সন্তানের বালির ঘর ভেঙে দিবে তখন কি তোমার সন্তান কান্না করবে?"লোকটি বলল,"হ্যাঁ অবশ্যই কান্না করবে।।"

গৌতম বুদ্ধ বললেন, "তুমি কি তোমার বাচ্চার সাথে কান্না করবে? লোকটি বলল, না আমি কান্না করব না। গৌতম বুদ্ধ জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কেন কান্না করবে না? তুমি তো তোমার বাচ্চাকে অনেক ভালোবাসো"

লোকটি বলল, বাচ্চা ভালোবেসে বালির ঘর তৈরি করবে সেটা তার কাছে অনেক সুন্দর মনে হবে। সে মনে করবে এটা চিরস্থায়ী, কখনো শেষ হয়ে যাবে না। একটি গভীর ভালোবাসা তৈরি হয়ে যাবে। যার ফলে সে কান্না করবে। অন্যদিকে আমি জানি, বালির ঘর বেশিক্ষণ থাকবে না, ক্ষণস্থায়ী, সমুদ্রের জলে ধুয়ে মুছে যাবে। আর এই কারণে যখন ওই ঘরটি সমুদ্রের জলে ভেঙে যাবে তখন আমার দুঃখ হবে না।
এরপর গৌতম বুদ্ধ মুচকি হেসে বলেন, "এবার কি তুমি বুঝতে পেরেছো সুখে থাকতে হলে তোমাকে কি করতে হবে??

শিক্ষা

এ গল্পে গৌতম বুদ্ধ এ শিক্ষা দিয়েছেন যে, কোন কিছুর বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়া। অর্থাৎ, কোন কিছুর সাথে যুক্ত না হওয়া। এ পৃথিবীতে কোন কিছুই পার্মানেন্ট বা স্থায়ী না। হোক সেটা মানুষ, বস্তু বা কোন সম্পর্ক। যদি আমরা কোন মানুষ বা বস্তুর সাথে নিজেকে যুক্ত করে দিই, তখন আমাদের অনেক কষ্ট হবে যখন সেই জিনিসটা বা মানুষটা আমাদের জীবনে থাকবে না, আমাদের ছেড়ে চলে যাবে। সুতরাং, ভালো থাকা, শান্তিতে থাকার একমাত্র উপায় হচ্ছে কারো সাথে নিজেকে যুক্ত না করা, কারো মায়ায় না পড়া। এ পৃথিবীতে সব কিছুই হচ্ছে একটি ভ্রম। কোন কিছুই স্থায়ী না। সব কিছুরই সমাপ্তি আছে, বিচ্ছেদ হয়। আপনি আপনার জীবনকে যেভাবে রাখতে চাইবেন ঠিক তেমনি থাকবে। সুতরাং, নিজেকে ভালো রাখতে চাইলে কারো সাথে ইমোশনালি জড়িয়ে পড়বেন না।

পজেটিভ চিন্তা করব, নিজেকে জ্ঞানহীন ভাববো

একবার গৌতম বুদ্ধের কাছে এক ব্যক্তি আসে। সে গৌতম বুদ্ধকে বলে, "আমি আপনার শিষ্য হতে চাই। আমি অনেক কিছু জানি এবং আরো অনেক কিছু জানতে চাই। এজন্য আপনার শিষ্য চাই। আমি এমন কথা শিখতে চাই যাতে আমার জীবন আপনার মত হতে পারে। দয়া করে,আমাকে আপনার শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করুন।" অতঃপর গৌতম বুদ্ধ তার দিকে তাকালেন এবং বললেন "তুমি যদি চাও আমার কাছ থেকে কিছু শিখতে, জ্ঞান লাভ করতে। তাহলে তুমি দশ দিন পর আমার কাছে আসবে।" এরপর ছেলেটি চলে যায় এবং ১০ দিন পর ফিরে এসে গৌতম বুদ্ধকে একই কথা বলে। আমি আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে চাই, আপনার মত জ্ঞানী হতে চাই। দয়া করে আপনি আমাকে আপনার শীর্ষ করে নিন। আবারও গৌতম বুদ্ধ ছেলেটিকে বলে "তুমি যদি আমার কাছ থেকে কিছু শিখতে চাও ,তাহলে ১০ দিন পর আসো।" এভাবেই বেশ কিছু মাস কেটে যায়। এরপর ছেলেটি গৌতম বুদ্ধের কাছে এসে বলে,হে প্রভু আপনি কেন আমাকে বারবার ফিরিয়ে দিচ্ছেন। আমাকে কেন শিক্ষা দিচ্ছেন না?কেন আমাকে আপনার শীর্ষ হিসেবে গ্রহণ করছেন না? এরপর গৌতম বুদ্ধ বলে "ঠিক আছে,তুমি আমার জন্য একগ্লাস ঠান্ডা জল নিয়ে আসো।" ছেলেটি বুদ্ধদেবের আদেশ অনুযায়ী এক গ্লাস জল নিয়ে আসে। বুদ্ধ ছেলেটিকে পুনরায় আর এক গ্লাস জল নিয়ে আসতে। ছেলেটি পুনরায় আর এক গ্লাস জল নিয়ে আসে। এরপর গৌতম বুদ্ধ বলেন,"তুমি একটি গ্লাসের জল আরেকটি গ্লাসে ঢালো। ছেলেটি প্রতি উত্তরে বলে, প্রভু তাহলে তো জল সব পড়ে যাবে। জল ঢালার জন্য যে কোন একটি গ্লাস আগে ফাঁকা করতে হবে। এরপর গৌতম বুদ্ধ বলেন "এটাই হচ্ছে আমার উত্তর। তুমি শেখার জন্য এখনো প্রস্তুত না। কারণ আগে থেকে তোমার মধ্যে অনেক জ্ঞান আছে, আর তুমি মনে কর তুমি অনেক জ্ঞানী। তাই তুমি নতুন কিছু শিখতে পারবে না। আর যদি নতুন কোন কিছু শিখতে চাও তাহলে তোমাকে এটা আগে স্বীকার করতে হবে তুমি কোন কিছু জানো না। ব্যাপারটা ঠিক ঐ জল ভর্তি গ্লাসের মত। যতক্ষণ না তুমি জল ভর্তি ক্লাস ফাঁকা না করবে ততক্ষণ তুমি পুনরায় জল ঢেলে গ্লাস পূর্ণ করতে পারবেনা। ঠিক তেমনি তোমার মধ্যে যে আগের জ্ঞান আছে তা যতক্ষণ না তুমি ফাঁকা করবে ততক্ষণ তুমি নতুন কিছু শিখতে পারবে না।"
 ছেলেটি গৌতম বুদ্ধের কথার অর্থ বুঝতে পারে। এরপর ছেলেটি ওয়াদা করে সে এমন মনে করবে না যে সে অনেক জ্ঞানী,।সে একজন আদর্শ শিষ্য হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবে এবং গৌতম বুদ্ধের প্রতিটি কথা মেনে চলবে।

শিক্ষা: 

আমাদের ব্রেন ইতোমধ্যে অনেক কিছু দিয়ে ভর্তি। যতক্ষণ না আমরা আমাদের ব্রেনকে ফাঁকা করতে পারবো ততক্ষণ নতুন কিছু শিখতে পারবো না। যদি আমরা নতুন কিছু শিখতে চাই, তাহলে ব্রেন কে ফাঁকা করতে হবে। সর্বদা পজেটিভ চিন্তা করতে হবে। নেগেটিভ চিন্তা থেকে দূরে থাকতে হবে। ব্রেন থেকে সকল খারাপ অতীত মুছে ফেলতে হবে।

মন কে পরিবর্তন করব, স্বভাবকে নয়

গৌতম বুদ্ধের কাছে এক রাজা আসে। সে বলে "প্রভু যেদিন থেকে আমি আপনার শিষ্য হয়েছি সেদিন থেকে মানুষ আমাকে ব্যবহার করে, ভয় পাই না, ঠিকমতো সম্মান করে না। অথচ যখন আমি রাজা ছিলাম তখন খুব রাগী ছিলাম,সবাই আমাকে প্রচন্ড ভয় করত, আমাকে দেখে ভয়ে কাঁপত। আমার ইচ্ছা হলে যে কাউকে মৃত্যু দন্ড দিতাম। কিন্তু যেদিন থেকে আমি আপনার শিশু হয়েছি সেদিন থেকে আমি আর কাউকে শাস্তি দেই না,মৃত্যু দন্ড দেয় না, কাউকে রাগ দেখায় না। সবার প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চাই। কিন্তু,আমার এই পরিবর্তনে কিছু মানুষ সুযোগ নিচ্ছে। যা আমার এবং আমার রাজ্যের জনগণের জন্য হুমকি। এখন আপনি আমাকে বলুন আমি কি করতে পারি।" 

গৌতম বুদ্ধ রাজা কে বললেন "আমি একটি গল্প বলছি তুমি তার মনোযোগ দিয়ে শোনো। একদা এক সন্ন্যাসী এক গ্রামের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিল। গ্রামের ভেতরে অনেক প্রাচীন একটি বড় বটগাছ ছিল। সন্ন্যাসী খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। তাই সে বটগাছের নিচে বিশ্রাম নেয়ার সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু গ্রামের লোকজন তাকে নিষেধ করল। বলল যে সেই বটগাছে একটি বিষাক্ত সাপ থাকে; সাপটি গ্রামের অনেক মানুষকে হত্যা করেছে এবং সামনে কাউকে পেলে তার আর রক্ষে নেই। সন্ন্যাসী তাদের বললেন আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। আমার মৃত্যু যদি বটগাছের নিচে লেখা থাকে তাহলে তাই হবে আমি ঐ গাছের নিচে বিশ্রাম নেব। অতঃপর, সন্ন্যাসী সেই বৃক্ষের নিচে বসে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর, সে বিষাক্ত সাপটি সন্ন্যাসীর সামনে উপস্থিত হয় এবং বলে,"হে মহাত্মা, আপনি কি জানেন না আমি এখানে থাকি এবং আমি কতটা বিষাক্ত।" আপনার কি প্রাণের ভয় নেই। প্রতি উত্তরে সন্ন্যাসী বলেন "এখানে তো আমি ভয়ের কিছু দেখছি না। ভয় তো তোমার মধ্যে আছে, কেউ যাতে তোমাকে হত্যা না করে। এজন্য তুমি মানুষকে দেখলে আক্রমণ কর। কিন্তু,আমার মধ্যে না মরার ভয় আছে, না বাঁচার লালসা আছে। মরতে তো একদিন হবেই।" এই কথাগুলো শুনে সাপটি থমকে যায়। সে তার জীবনে এমন কাউকে দেখেনি যে তার ভয় এ পালিয়ে যায়নি বা তাকে মারার চেষ্টা করেনি; এমন কারো সাথে সাক্ষাৎ হয়নি যে তাকে নির্ভয়ে হত্যার চেষ্টা না করে এত সুন্দর ভাবে কথা বলেছে। সাপটি সন্ন্যাসী দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মাথা নত করে এবং বলে আমাকে উপদেশ দিন। সন্ন্যাসী সাপটিকে বলে "তোমার মধ্যে প্রেমের জন্ম দাও, ভালোবাসা ছড়িয়ে দাও, অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকো।" এই বলে সন্ন্যাসী সাপ কে  বিদায় জানিয়ে চলে যায়। সাপটি সন্ন্যাসীর কথামতো নিজেকে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সাপটি আর মানুষকে ভয় দেখায় না, তাড়া করে না, এমনকি দংশন করে না। সে মানুষের সাথে ভালোবেসে মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করছিল। ফলশ্রুতিতে মানুষ তার এই পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে তাকে বিরক্ত করত, আঘাত করতো, হত্যার চেষ্টা করত। ফলশ্রুতিতে ,সাপটির অবস্থা খুবই খারাপ এবং নাজেহাল হয়ে যায়।অথচ সাপটি ততক্ষণ সুরক্ষিত ছিল যতক্ষণ মানুষ তাকে ভয় পেত। এভাবে অনেক দিন চলতে থাকে। এরপর ঐ সন্ন্যাসী বৃক্ষের নিচে বিশ্রামের জন্য পুনরায় আসে। সন্ন্যাসী সাপটিকে দেখে হতবিম্ব হয়ে যায়। সাপটির সেই আগের চেহারা এখন আর নেই, শরীরে ক্ষত এর চিহ্ন। সাপটি সন্ন্যাসীকে বলে ,মহাত্মা আপনার উপদেশ গ্রহণ করার পর থেকে আমি নিজেকে শান্ত করে গড়ে তুলেছি, নিজের মধ্যে ভালোবাসা কে স্থান দিয়েছি, ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, আমার পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষ সেই সুযোগটা নিয়েছে। এখন আমার বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এখন আপনি বলুন আমার কি করা উচিত।
সন্ন্যাসী বলেন, "আমি তো তোমাকে বলিনি যে তোমার স্বভাব পরিবর্তন কর। তোমার মতে রাগ না থাকলে মানুষ তো তোমাকে হত্যা করার চেষ্টা করবে। এর মানে এটা নয় যে তোমার মধ্যে যে খারাপ চিন্তা ছিল তা তোমার নিজের মধ্যে ধরে রাখবে। তোমাকে তোমার নিজের ভেতর থেকে সঠিক রাখতে হবে। কারো ক্ষতি করবে না। বাইরে থেকে তোমার রাগ সবাইকে অবশ্যই দেখাবে। তুমি হচ্ছো একটি সাপ একটি বিষাক্ত সাপ। তোমার সম্পর্কে মানুষের মধ্যে একটা ভয় কাজ করা উচিত বা থাকা উচিত। যদি মানুষের মধ্যে তোমার প্রতি কোন ভয় না থাকে তাহলে মানুষ তো তোমার ক্ষতি করবেই। তুমি কারো কোন ক্ষতি করবে না শুধু তোমার প্রতি ভয়টা সবার মধ্যে জাগিয়ে রাখবে।

এরপর গৌতম বুদ্ধ রাজাকে জিজ্ঞেস করেন এই গল্প থেকে তুমি কি শিখলে? 

এ গল্প থেকে আমরা এটাই শিখতে পারি আজকের পর তুমি তোমার স্বভাবকে পরিবর্তন করবেনা। তুমি রাজা, তোমার রাগ যেটা সেটা তুমি দেখাবে। কিন্তু তুমি তোমার মন কে পরিবর্তন করবে। মনের মত উদ্দেশ্য সব সময় সৎ রাখবে। কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করবে না। তাহলে তুমি খুশি হবে এবং অন্য মানুষকে খুশি রাখতে পারবে। 

শিক্ষা: 

আমাদের মনে সব সময় মানুষের প্রতি ভালোবাসা রাখবো। নিজের স্বভাবকে পরিবর্তন করব না যাতে মানুষের সুযোগ নিতে পারে। আমরা ভেতর থেকে নিজেকে পরিবর্তন করব, ভেতরে উদ্দেশ্যে সৎ থাকবে। মানুষের কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করব না, ভালোবাসার ছড়িয়ে দেব। কিন্তু, বাহিরে নিজের সহজাত স্বভাব বজায় রাখবো। বাহিরে সব সময় কোমলতা দেখালে, মানুষ কিন্তু তার সুযোগ নেবেই। ফলে আমরা নিজেরাই ঝুঁকিতে পড়বো।

লেখক এর কিছু কথা

নিজেকে ভালো রাখার জন্য অবশ্যই সর্বসময় ইতিবাচক চিন্তা করতে হবে। পৃথিবীর সম্পর্ক গুলোর প্রতি মায়া, মোহ ত্যাগ করতে হবে এবং নিজের মনকে পরিবর্তন করে ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে হবে। চিন্তায় ইতিবাচক না হলে আমরা কখনোই ভালো কিছু অর্জন করতে পারবোনা। কাউকে এটাস্ট হলে তা আমাদের অবশ্য দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এবং সর্বশেষ নিজেকে ভালো রাখার জন্য নিজেকে প্রচুর ভালোবাসতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url